দিল্লির জামা মসজিদ, যন্তর-মন্তর, পুলিশ সদর দফতর, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, শাহিনবাগ-সহ দেশের নানা প্রান্তে ‘আজাদি’ স্লোগান উঠেছে। ছবি: পিটিআই।
আরে হাম ক্যয়া চাহতে?
ভিড়ের জবাব — আজাদি।
গত কয়েক বছরে ছাত্রদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছে এই ‘আজাদি’ স্লোগান। মূলত দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে (জেএনইউ) কোনও বিষয়ে প্রতিবাদে ডাফলির শব্দের সঙ্গে ভেসে উঠেছে এই সুর। ‘আজাদি’ শব্দটি অক্ষুণ্ণ থেকেছে, বিষয় অনুযায়ী বদলে গিয়েছে বাকি শব্দ। অনেকের দাবি, ‘আজাদি’ স্লোগান জনপ্রিয় করার নেপথ্যে জেএনইউ-এর প্রাক্তন ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার।
এখন এই ‘আজাদি’ স্লোগান আর শুধু সেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেই সীমাবদ্ধ নয়। দিল্লিতেই জামা মসজিদ, যন্তর-মন্তর, পুলিশ সদর দফতর, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, শাহিনবাগে এই স্লোগান উঠেছে। আজও জামিয়ার বিক্ষোভে স্লোগান উঠেছে— হাম ক্যায়া চাহতে.. আজাদি। যোগী-মোদী সে... আজাদি। অমিত শাহ সে... আজাদি।
আরও পড়ুন: বিভাজনের বিরুদ্ধেই কবিতা, বলছেন বরুণ
জেএনইউ থেকে ‘আজাদি’ শব্দ বেরোলেই মোদী সরকারের মন্ত্রীরা বলতেন, ‘সব দেশ-বিরোধী কাণ্ড!’ বিজেপি নেতারা মনে করাতেন, নব্বই দশকের গোড়ায় কাশ্মীর থেকে পণ্ডিতদের তাড়ানোর সময়ে দেওয়া হতো ‘আজাদি’ স্লোগান। সেই স্লোগান এখনও আতঙ্কের স্মৃতি ফিরিয়ে আনে তাঁদের কাছে। তবে এখন প্রতিবাদ যত বাড়ছে, বাড়ছে বিজেপির রক্তচাপও। বিজেপির একাংশ ভাবছে, যতই এটি ফারসি শব্দ হোক, আর উর্দু শব্দভাণ্ডারে ঠাঁই করে নিক না কেন, রাজ্যে রাজ্যে ‘আজাদি’ স্লোগান তুলবেন তাঁরাও। তবে একটু অন্য ভাবে।
বিজেপির এক নেতা জানাচ্ছেন, ‘‘সিএএ-র বিরুদ্ধেই যত প্রতিবাদ। সেখানেই উঠছে ‘আজাদি’ স্লোগান। এই আইনের সমর্থনে আমরাও গোটা দেশে পাল্টা মিছিল, সভা করছি। আমাদেরই কিছু নেতা পাড়ায় পাড়ায় ‘আজাদি’ স্লোগান তুলছেন।’’ কী ভাবে? স্লোগান তোলা হচ্ছে, ‘মোদী দেঙ্গে.. আজাদি। আফজল (গুরু) কো দি থি... আজাদি। কসাব কো দি থি... আজাদি।’ আপাতত বিজেপি বিক্ষিপ্ত ভাবে এর প্রয়োগ করে জল মাপতে চাইছে। ‘সাফল্য’ মিললে দলে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করে পাকাপাকি সিদ্ধান্ত হবে।
বিজেপি শিবিরের মতে, নারীবাদী লেখিকা কমলা ভাসিন এক সময়ে দাবি করেছিলেন, পাকিস্তানের নারীবাদী আন্দোলনে এই স্লোগান ব্যবহার হয়েছিল। তার পরেই তিনি এ দেশে মহিলাদের অধিকার, পুরুষতান্ত্রিক সমাজ থেকে মুক্তির কথা বলতে ‘আজাদি’ স্লোগান ব্যবহার করেন। এর পর জেএনইউ-এর বামপন্থী নেতারা সেটিকে জনপ্রিয় করেন। কিন্তু আসলে এই স্লোগানের সঙ্গে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর নির্যাতনের ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে। একটি ছবিও শীঘ্র মুক্তি পাবে, যেখানে এর ঝলক দেখা যাবে।