ফাইল চিত্র।
দিল্লির ভোটে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী কে, বারবার প্রশ্ন করার পরেও বলতে পারেননি অমিত শাহ। কিন্তু দিল্লির পর বছরের শেষে বিহারের ভোটে জোটের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী যে নীতীশ কুমারই, সেটি বারবার বলেছেন। নীতীশ দিল্লিতে একবার সভা করতে এসেছিলেন, যোগ দিতে ছুটে যান অমিত শাহ। এমনকি দিল্লি প্রচারে নিজের বক্তৃতায় নীতীশের নাম টেনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও।
বিহারের বিধানসভা ভোটের এখনও অন্তত মাস আটেক বাকি। তারও ছয় মাস আগে থেকে বিজেপির শীর্ষ নেতাদের মুখে কেন এত নীতীশ-বন্দনা? উত্তর দিচ্ছেন কংগ্রেসের এক নেতা। বলছেন, ‘‘লোকসভা নির্বাচনের আগেও নীতীশ নিরন্তর যোগাযোগ রেখেছেন কংগ্রেসের সঙ্গে। এমনকি বিজেপির সঙ্গে ঘর করা সত্ত্বেও কথা চালিয়েছেন লালু প্রসাদ যাদবের সঙ্গে। এ বারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে নীতীশ যদি বিজেপিকে ছেড়ে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মেলান, সে ক্ষেত্রে বিহার জিতে তিনি ফের মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।’’
কংগ্রেসের এক সূত্রের মতে, এই বার্তা ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে নীতীশ কুমারের কাছে। কিন্তু সমস্যা লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। পাঁচ বছর আগে আরজেডি-কংগ্রেসের সঙ্গে মিলে ক্ষমতায় এলেও মাঝপথে নীতীশ কুমার রাতারাতি জোট ছেড়ে বিজেপির হাত ধরে নতুন সরকার গড়ে ফেলেন। তার পর থেকেই নীতীশকে ‘পলটু চাচা’ বলে ডাকেন তেজস্বী। লোকসভা ভোটের আগে নীতীশ কংগ্রেস-লালুর সঙ্গে যোগাযোগ রাখলেও তেজস্বীই বাদ সাধেন। কিন্তু এখন দূত মারফত বিরোধী নেতারা তেজস্বীকে বোঝানোর চেষ্টা করছেন, যাতে তিনি মেনে নেন। এ ব্যাপারে বিরোধী নেতারা কথা বলবেন লালু প্রসাদের সঙ্গেও।
আরজেডি নেতারা মনে করছেন, ভোটের প্রচার শুরুর আগেই লালু প্রসাদ জামিন পেয়ে যাবেন। আরজেডি-র মনোজ ঝা বলেন, ‘‘আইনি বিষয় নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু লালুজি ছাড়া পেলে আমাদের কাছে আশীর্বাদ।’’ বিরোধীরা চাইছে, লালুর মাধ্যমে ভোটের আগেই বিজেপি-বিরোধী জোটকে পোক্ত করতে। কিন্তু বিরোধী শিবিরে নীতীশ এলে কী লাভ? অঙ্ক বলছে, ক্ষতি নেই। বিরোধী শিবিরের এক নেতার হিসেব, গত ভোটে জেডিইউ, আরজেডি, কংগ্রেস মিলে প্রায় ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছে। রামবিলাস পাসোয়ানদের সঙ্গে নিয়ে বিজেপি জোটের ভোট ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। নীতীশের ১৬-১৭ শতাংশ ভোট যে জোটে থাকবে, তাদেরই জয় হবে। সে কারণেই অমিত শাহরা নীতীশের কদর করছেন।
বিরোধী শিবিরের আশা, দিল্লি ভোটের পর নীতীশ বিজেপির সঙ্গে আসন নিয়ে আরও বেশি দর কষাকষি করতে পারেন। বিজেপি না মানলেই ভেস্তে যেতে পারে জোট। তবে তার আগে বিরোধী জোটের নকশাও চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে।