প্রতীকী ছবি।
লোকসভা ভোটে রাজ্যে ১৮টি আসন জিতে বাংলায় ক্ষমতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বিজেপি। কিন্তু দু’বছরেও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তুলে ধরার মতো কোনও মুখ তারা খুঁজে পায়নি। এ বার বিধানসভা ভোটে পরাজিত হওয়ার পরে বিরোধী দলনেতার মুখ বেছে উঠতে পারছে না গেরুয়া শিবির। তাদের ব্যাখ্যা, বাংলায় ‘সন্ত্রাসজনিত পরিস্থিতি’র কারণেই বিলম্ব।
ভোটের ফল প্রকাশের পরে তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া হয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু বিজেপির বিরোধী দলনেতার নাম ঘোষণা হয়নি এখনও। অসমে বিজেপি জেতার পরে সে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীর নামও ঘোষণা হয়নি। এই নিয়ে প্রশ্নের জবাবে বুধবার কলকাতায় বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নড্ডা বলেছেন, ‘‘এই কাজ করতে গেলে সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক করতে হবে। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি যদি বাংলায় হিংসার ঘটনার জেরে ফল ঘোষণার দু’দিনের মধ্যে কলকাতায় চলে আসেন, তা হলে বৈঠকটা ডাকবেন কখন! তবে নিশ্চিন্ত থাকুন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই অসমে মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলায় বিরোধী দলনেতা নির্বাচিত হবেন।’’
নড্ডা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বা বিরোধী দলনেতা ঠিক করার বিষয়ে বিজেপির সংসদীয় বোর্ডে আলোচনা হয়। তার পরে পর্যবেক্ষক পাঠানো হয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যে। তিনি নির্বাচিত বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসে প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেন। এই ক্ষেত্রেও সেই সাংগঠনিক রীতিই মানা হবে, বাংলার পরিস্থিতির কারণে তাতে একটু সময় লাগছে।
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের নবনির্বাচিত বিধায়কদের আলাদা দলে ভাগ করে কোভিড-বিধি মেনে এ দিন আলাদা করে বৈঠকে বসেছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি। বৈঠকে অবশ্য সব বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন না। তার আগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিধায়কদের শপথ-পর্বেও দেখা যায়নি দলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়কে। দলের আর এক গুরুত্বপূর্ণ মুখ শুভেন্দু অধিকারী অবশ্য উপস্থিত ছিলেন। বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনায় নড্ডা বলেন, তাঁরা সরকার গড়ার জায়গায় পৌঁছতে পারেননি ঠিকই। কিন্তু তিন জন থেকে ৭৭ জন বিধায়কে পৌঁছেছে দল। এই ‘ইতিবাচক’ দিক মাথায় রেখেই লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। ভবিষ্যতে বিজেপি ক্ষমতা দখলের জায়গায় পৌঁছতে পারবে, এই বিশ্বাস রেখে কাজ করার বার্তাই এ দিন দিয়েছেন নড্ডা।
বিধানসভায় আজ, বৃহস্পতি ও কাল, শুক্রবার জেলা ধরে ধরে ভাগ করে নতুন বিধায়কদের আনুষ্ঠানিত শপথ গ্রহণ হবে। প্রোটেম স্পিকার হিসেবে শপথ নেবেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। বিদায়ী স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, শংসাপত্র ও চার কপি ছবি নিয়ে বিধায়কদের আসতে হবে। নবগঠিত বিধানসভার প্রথম অধিবেশন বসবে ৮ মে, শনিবার।