যেন কিছুই হয়নি, দেখাচ্ছে বিজেপি

দু’দিন পরেও দলের কোনও সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডাকলেন না শাহ। বিরোধী দলনেতা স্থির করার বৈঠকও হল না। আজ কুরুক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবের সফরও বাতিল করলেন শাহ। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৩৮
Share:

সংসদে অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।

দু’দিন আড়ালে থাকার পর আজ সামনে এলেন অমিত শাহ। পাঁচ রাজ্যের হারের আঁচ যাতে ‘ব্র্যান্ড-মোদী’তে না পড়ে, তার নকশা নিয়ে।

Advertisement

আড়ালে থেকেই হিন্দি বলয়ের তিন রাজ্যের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীকে দিয়ে হারের দায় নেওয়ানো হয়েছে। মধ্যপ্রদেশের রাজ্য সভাপতি রাকেশ সিংহকে দিয়ে ইস্তফার প্রস্তাবও দেওয়ানো হয়েছে। যদিও অমিত শাহ তা খারিজ করেছেন। কিন্তু দু’দিন পরেও দলের কোনও সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ডাকলেন না শাহ। বিরোধী দলনেতা স্থির করার বৈঠকও হল না। আজ কুরুক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গীতা মহোৎসবের সফরও বাতিল করলেন শাহ।

তবুও আজ সকালে সংসদ হামলার বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে একসঙ্গে সামনে এলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। তার আগে বিজেপির সংসদীয় দলের বৈঠকেও। মোদী বললেন, কিন্তু পাঁচ রাজ্যের হারের প্রসঙ্গের ধারে কাছে গেলেন না। উল্টে প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ী, অনন্ত কুমারদের নিয়ে আবেগ উস্কে দিলেন। আর দুপুরে অমিত বসলেন পদাধিকারীদের নিয়ে। যে বৈঠক প্রথমে ঠিক ছিল দুপুর দুটোয়, পরে বদলে হল বিকাল পাঁচটায়, তার পর ফের এগিয়ে হল তিনটেয়।

Advertisement

কেন?

বিজেপির এক নেতার মতে, ‘‘সারা দিন টেলিভিশনের পর্দা দখল করে আছেন রাহুল গাঁধী। তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্থির হচ্ছে তাঁদের। তাই ফাঁক খোঁজা হচ্ছিল। আমরা দেখাতে চাইছি, পাঁচ রাজ্যের ফল যাই হোক, বিজেপির ভোট অটুট। আর ‘ব্র্যান্ড মোদী’-তেও কোনও আঁচ পড়েনি।’’ ওই নেতার ব্যাখ্যা—ভোটের ফল প্রকাশের পরও নিরন্তর কাজ করে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ভোটের ফল তাঁকে বিচলিত করেনি। বিজেপির সব মোর্চা ও রাজ্য নেতাদের ডেকে আজ তাই বার্তা দেওয়া হল, লোকসভার জন্য তৈরি হ‌োন। ডিসেম্বর থেকেই ভোট প্রচারে নামছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ, ধৈর্য-অস্ত্রে জট খুলছেন রাহুল

এই বৈঠকের ফাঁকেই বিজেপির পক্ষে ভূপেন্দ্র যাদব সাংবাদিকদের জানালেন, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত দলের যুব, মহিলা, দলিত, আদিবাসী, ওবিসি, সংখ্যালঘু কৃষক মোর্চার সভা কোথায় হবে। তার মধ্যে উত্তরপ্রদেশে কৃষকদের সভাতেও যাবেন প্রধানমন্ত্রী। জানুয়ারিতে দিল্লিতে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠক হবে। ডিসেম্বর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর সভা শুরু হচ্ছে দেশের ১২২টি এলাকায়, যেখানে বিজেপি দুর্বল। এর সঙ্গেই দলের নেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সংগঠনকে চাঙ্গা করার নানা কর্মসূচি। ভাবখানা যেন, এই হারে একেবারেই বিচলিত নন নেতৃত্ব।

আরও পড়ুন: গোরক্ষকদের ‘জবাব’ দিয়ে খুশি অলওয়ার

এই ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যেই বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সম্মেলনে রাখা হয়েছে ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি, যে দু’দিন রামমন্দির নিয়ে সাধুদের ধর্ম সংসদ প্রয়াগরাজে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্ট কিছু না করলে সরকার পদক্ষেপ করবেই। যে রাজ্যে কংগ্রেস জিতেছে, সেখানে রাহুল গাঁধীর কৃষি ঋণ মাফের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ না হলে বিজেপি সমর্থক কৃষকরাই পথে নামবে। এই ফল শাপে বর হল।’’ রাতে বৈঠকের পরে অমিত বললেন, ‘‘ভোটের ফল খারাপ হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এর চেয়েও অনেক খারাপ দিন দেখেছে বিজেপি।’’ তাঁর দাবি, এই হার মোদীর নয়। ২০১৯-এ মোদীই ফিরছেন। কর্মীরা একটু পরিশ্রম করলেই হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement