মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীস। -ফাইল ছবি।
মুখ্যমন্ত্রী পদ ভাগ করে নেওয়া নিয়ে শিবসেনার দাবির মধ্যেই মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেবেন্দ্র ফডণবীসের নাম প্রস্তাব করল বিজেপি। তাঁকে আজ বিজেপির পরিষদীয় দলের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। আর তার পরেই ফডণবীস জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনার জোটই সরকার গড়তে চলেছে। এ নিয়ে বিকল্প কোনও পরিকল্পনা তাঁদের নেই। বিধানসভা ভোটে জয়ের জন্য শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরেকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী।
এরই মধ্যে জট কাটাতে নতুন প্রস্তাবও হাজির করেছে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহের দল। বিজেপি সূত্রের খবর, শিবসেনাকে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে রাজি না হলেও মন্ত্রিসভা গঠনে তাদের গুরুত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। উপ-মুখ্যমন্ত্রী পদ এবং ১৩টি দফতর শিবসেনাকে ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সে ক্ষেত্রে ২৬টি দফতর নিজেদের কাছে রাখবে বিজেপি। পাশাপাশি, কেন্দ্রেও শিবসেনাকে মন্ত্রক ছাড়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল শিবসেনার বিধায়ক দলের বৈঠক। সেখানেই সরকার গঠন নিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করবেন শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে। তাঁর ছেলে আদিত্য ঠাকরেকে আড়াই বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করতে দলের ভিতরে দাবি উঠেছে। তবে উদ্ধব পাঁচ বছরের জন্য আদিত্যকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে রাজি হন কি না, সেটা দেখার।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী পদ আড়াই বছর করে ভাগ করে নেওয়ার জন্য শিবসেনা অনড় অবস্থান নেওয়ায় গত কালই বিজেপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা সেই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন। ফডণবীস জানিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটের আগে জোট শরিকদের মধ্যে এমন কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছিল বলে তাঁর জানা নেই। উল্টে বিজেপির কেউ কেউ দাবি করেন, সরকার গড়তে দর কষাকষি করলে শিবসেনায় ভাঙন নিশ্চিত। সেনার নবনির্বাচিত বিধায়কদের মধ্যে অন্তত ৪৫ জন বিজেপিকে সমর্থন দেবে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় কাকড়ে। তবে দুই শরিকের স্নায়ুযুদ্ধের মধ্যে ফডণবীস আজ সুর বদলে ফেলেন। বলেন, ‘‘সরকার গড়ার বিকল্প ফর্মুলা নিয়ে অনেক গুজব রটছে। এটা আমাদের কাছে বিনোদন ছাড়া আর কিছু নয়।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘মহারাষ্ট্রের ভোটারেরা বিজেপি-শিবসেনা জোটের পক্ষে রায় দিয়েছেন। ফলে রাজ্যে বিজেপি-শিবসেনা জোটই দ্রুত সরকার গড়বে। জল্পনার অবকাশ নেই।’’ ফডণবীসের ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতা গিরিশ মহাজন বলেন, ‘‘শিবসেনাকে নিয়েই আমরা সরকার গড়ব। শিবসেনা ছাড়া কোনও শপথগ্রহণ হবে না।’’
বিজেপি-শিবসেনার সম্পর্কে টানাপড়েনের মধ্যে জল্পনা ছিল, শরদ পওয়ারের দল এনসিপি-র সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়ার চেষ্টা হতে পারে। কংগ্রেস সেই সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন দেবে। কিন্তু এই ধরনের কোনও সরকারের সম্ভাবনায় আজ জল ঢেলে দিয়েছেন রাজ্য এনসিপি-র শীর্ষ নেতা জয়ন্ত পাটিল। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর দল এবং কংগ্রেস বিরোধী আসনেই বসবে। এনসিপির আর এক নেতা প্রফুল্ল পটেল বিজেপি-শিবসেনার লড়াইকে ‘লোকদেখানো’ আখ্যা দিয়েছেন। তিনিও জানান, সরকার গড়তে বিজেপি কিংবা শিবসেনা— কাউকেই সমর্থন দেবে না এনসিপি। শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত পওয়ার আজ এনসিপি-র পরিষদীয় দলনেতা নির্বাচিত হয়েছেন।