ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ব্যাট নিয়ে আকাশ চড়াও হচ্ছেন সরকারি কর্মীর উপরে। ছবি: পিটিআই।
এক পুর আধিকারিককে আজ ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে গ্রেফতার হলেন মধ্যপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক আকাশ বিজয়বর্গীয়। তিনি বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের ছেলে। আকাশ অবশ্য একটি টিভি চ্যানেলকে ফোনে জানান কৃতকর্মের জন্য তিিন অনুতপ্ত নন। আদালত আকাশের জামিনের আর্জি খারিজ করে তাঁকে ১১ জুলাই পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়েছে।
আকাশের হয়ে বিজেপি নেতা হিতেশ বাজপেয়ীর যুক্তি, ‘‘সরকারি আধিকারিক ঘুষ চেয়েছিলেন। আকাশ তার প্রতিবাদ করেন। তার পরই ওই ঘটনা। ব্যাট দিয়ে মারার জন্য আকাশের জেল হতে পারে, কিন্তু যে আধিকারিক ঘুষ চেয়েছেন, তাঁর কী হবে?’’ কংগ্রেসের নেত্রী শোভা ওঝার আক্রমণ, ‘‘মধ্যপ্রদেশ সরকার গুন্ডামি সহ্য করবে না। এটা কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং তাঁর ছেলের মনে রাখা উচিত।’’ তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘যিনি মধ্যপ্রদেশে এমন কাণ্ড ঘটাচ্ছেন, তাঁর বাবা বাংলায় বিজেপির দায়িত্বে। হিন্দি বলয়ের সংস্কৃতি এ রাজ্য আমদানি করতে চাইছে বিজেপি। মানুষকে বুঝতে হবে, কারা বাংলার দখল নিতে চাইছে।’’
সরকারি আধিকারিকের উপর কৈলাস-পুত্রের চড়াও হওয়ার ঘটনার ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে তেড়ে যাচ্ছেন আকাশ। ধীরেন্দ্র ব্যাস নামে ওই আধিকারিক তখন মোবাইলে কথা বলছিলেন। আকাশ তাঁকে ব্যাট দিয়ে দু’বার মারেন। ধীরেন্দ্রকে এক পুলিশকর্মী উদ্ধার করে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। তখন ওই আধিকারিককে বেশ কয়েক বার চড় মারেন এবং শাসাতে থাকেন বিজেপি বিধায়ক। আকাশের অনুগামীরাও ধীরেন্দ্রকে হেনস্থা করেন।
ইনদওর পুর নিগমের কর্মীরা যখন ধীরেন্দ্র এবং অসিত খেরের নেতৃত্বে গঞ্জি আবাসনে জবরদখল উচ্ছেদ করে বাড়ি ভাঙতে গিয়েছিলেন, তখন ঘটনার সূত্রপাত। ওই এলাকা আকাশের বিধানসভা কেন্দ্র ইনদওর-৩ এর মধ্যে। পুরকর্মীরা সেখানে গেলে বাসিন্দাদের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তখন সেখানে পৌঁছন কৈলাস-পুত্র। প্রথমে বচসা এবং পরে ধীরেন্দ্রের উপর চড়াও হন আকাশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিজেপি বিধায়ক ওই আধিকারিককে বলতে থাকেন, ‘‘পাঁচ মিনিটে এখান থেকে চলে না গেলে ঘটনার জন্য দায়ী থাকবেন আপনি।’’ পরে আকাশ বলেন, ‘‘বাড়ি-মালিক পুরসভাকে টাকা দেন, বাড়ি ভাঙার জন্য। ওই বাড়িতে অনেকেই থাকেন। একটা সমাধানে পৌঁছতে চেষ্টা করছিলাম। যাঁরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন, তাঁদের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে।’’
আকাশের অভিযোগ, পুরকর্মীরা বাড়ির বাসিন্দা ও মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এক মহিলার হাত ধরেও টানেন। তা তিনি সহ্য করতে পারেননি। রাগের বশে মারধর করেন। যদিও চ্যানেলকে ফোনে আকাশ জানান, মারধরের জন্য দুঃখিত নন। কারণ, তিনি আত্মরক্ষার চেষ্টা করেছেন মাত্র। তাঁর অভিযোগ, বাড়ির ভিতরে পুরকর্মীরা তাঁকে হুমকি দেন। পুরকর্মীদের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের যোগসাজশ রয়েছে। বাড়ি দখল করতেই কর্মীরা সেটি ভাঙতে যান। সোশ্যাল মিডিয়ায় মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে। পুলিশ আকাশ এবং ১০ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। তার ভিত্তিতে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।