TMC

Tripura: তিন মাস বনাম ২২ বছর, তরজা তৃণমূল-বিজেপির

একাংশের মতে, ২২ বছর আগে বাম-শাসিত ত্রিপুরায় তৃণমূল যখন প্রথম লড়তে গিয়েছিল, তখনকার সঙ্গে এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির মিল নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আগরতলা ও কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৪৫
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

মাত্র তিন মাসের প্রস্তুতিতে ত্রিপুরায় ‘প্রধান বিরোধী শক্তি’ হিসেবে উঠে আসার যে দাবি তৃণমূল কংগ্রেস করেছে, এ বার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিজেপি। পুরনো তথ্য সামনে এনে তাদের পাল্টা বক্তব্য, তৃণমূল দল তৈরির পরেই ১৯৯৯ সালে ত্রিপুরায় লোকসভা আসনে লড়াই করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। সেই ২২ বছর আগে পাওয়া ভোটের হারও এ বার তৃণমূল ধরে রাখতে পারেনি। বরং, এত বছরের চেষ্টাতেও তৃণমূল ত্রিপুরার সব জায়গায় লড়াইয়ের লোক খুঁজে পায়নি! তৃণমূলের পাল্টা বক্তব্য, এ বারের পুরভোট মোটেও ‘সুষ্ঠু’ ভাবে হয়নি। তার মধ্যেও যে সব জায়গায় তারা লড়াই করেছে, সেখান থেকেই ভবিষ্যতে বড় শক্তি হিসেবে উঠে আসার রসদ মিলেছে।

Advertisement

রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ অবশ্য মনে করছে, ২২ বছর আগে বাম-শাসিত ত্রিপুরায় তৃণমূল যখন প্রথম লড়তে গিয়েছিল, তখনকার সঙ্গে এখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির মিল নেই। ভোট নিয়ে বিরোধীদের সেই সময়ে এত অভিযোগও ছিল না। অথচ এখন বিজেপির শাসনে সুষ্ঠু ভোট তো পরের কথা, বিরোধীদের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালাতেও বাধা দেওয়া হয় বলে বিস্তর অভিযোগ আছে। তৃণমূল নেতৃত্বেরও যুক্তি, তাঁদের ‘ব্যর্থতা’ দেখাতে গিয়ে বিজেপিকে আসলে এখন সিপিএমকে ‘ঢাল’ করতে হচ্ছে!

ত্রিপুরার শিক্ষা ও আইনমন্ত্রী রতন লাল নাথের বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল এখানে তিন মাস নয়, ২২ বছর ধরে আছে! এখন তারা শুধুই মানুষকে বিভ্রান্ত করে চলেছে। ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিম ত্রিপুরা আসনে প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সুধীর রঞ্জন মজুমদার তৃণমূলের প্রার্থী হয়ে ২৬.৪০% ভোট পেয়েছিলেন। বর্তমানে তৃণমূল ১৬.৩৯% ভোট পেয়েছে।’’ তৃণমূলের ‘তিন মাসে শূন্য থেকে দ্বিতীয় স্থানে’ আসার দাবি নস্যাৎ করে রতনবাবু আরও বলেছেন, ২০০৪ সালে অমল মল্লিক ৯.৬১% শতাংশ এবং ২০১৪ সালে রতন চক্রবর্তী তৃণমূলের প্রতীকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে ১০.৯৭% ভোট পেয়েছিলেন। অথচ এত কিছুর পরেও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল প্রার্থী খুঁজে পায়নি! ত্রিপুরার মন্ত্রীর এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন বাংলার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও।

Advertisement

তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্য আহ্বায়ক সুবল ভৌমিক অবশ্য পাল্টা দাবি করেছেন, ‘‘রতন লাল নাথ সিপিএমের হয়ে সাফাই গেয়েছেন! আমরা আগরতলা পুর নিগম এবং তেলিয়ামুড়া পুর পরিষদে সব আসনে লড়াই করেছি। আমরা নতুন ভোটব্যাঙ্ক তৈরি করেছি। যে জায়গায় তৃণমূল লড়াই করেনি, সেখানকার গড় টেনে কেন হিসেব করা হচ্ছে?’’ তাঁর বক্তব্য, তৃণমূল আগরতলায় ৫১টি আসনে লড়াই করে ২০%, তেলিয়ামুড়ায় ১৫টি আসনে ২৭% এবং আমবাসা পুর পরিষদের ১৫টি আসনে ২৭% ভোট পেয়েছে। একমাত্র সোনামুড়া নগর পঞ্চায়েতের সবগুলি আসনে লড়াই করে তাঁরা সিপিএমের থেকে পিছিয়ে আছেন।

নির্বাচনে জালিয়াতি ও সন্ত্রাসের প্রশ্নেও বিরোধীদের পাল্টা নিশানা করেছেন রতনবাবু। তাঁর দাবি, ২০১৫ সালে পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনের আগে গুলি চলেছিল, সমাজবিরোধীদের হাতে মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন। খোয়াইয়ে সন্ত্রাসের প্রতিবাদে বিরোধী কংগ্রেস ভোট বয়কট করেছিল। প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহারে বাধ্য হয়েছিলেন। সোনামুড়াতেও বুথ জ্যাম, ছাপ্পা ভোটের অজস্র অভিযোগ ছিল। মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘এ বারের পুর ও নগর সংস্থা নির্বাচনের মতো শান্তিপূর্ণ ভোট অতীতে কেউ দেখেননি। অথচ এই শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী পর্বে সন্ত্রাস হয়েছে বলে গলা ফাটিয়েছে বিরোধীরা!’’

সুবলবাবুর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘তৃণমূলই তো সন্ত্রাসের শতাধিক অভিযোগ করেছে। আমাদের ১০ প্রার্থী ভোট দিতে পারেননি। শিক্ষামন্ত্রী কেন রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement