বাংলার রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ফাইল ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে বিজেপি এবং এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হল। শনিবার এ কথা জানান বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি এবং এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে কিসানপুত্র জগদীপ ধনখড়ের নাম ঘোষণা করছি। আশা করছি, দলমত নির্বিশেষে সবাই তাঁকে সমর্থন করবেন।’’
সূত্রের খবর, বিজেপির সদর দফতরে সংসদীয় দলের বৈঠকে ধনখড়ের নামে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য নিতিন গডকড়ী, মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, বিজেপি তথা এনডিএ-র যা সমস্য সংখ্যা, তাতে সব ঠিকমতো চললে দেশের পরবর্তী উপরাষ্ট্রপতি হওয়ার সমস্যা হওয়ার কথা নয় জগদীপ ধনখড়ের।
২০১৯-এর জুলাইয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ধনখড়ের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়েছে নবান্ন। একাধিক বিষয়ে, অজস্র বার রাজ্য সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন ধনখড়। বার বার রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের ডেকে পাঠিয়েছেন রাজভবনে। পাল্টা কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে নবান্ন থেকেও। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী ধনখড়কে টুইটারে ব্লকও করে দেন। যদিও সেই রাগারাগি দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সম্প্রতি জিটিএ চেয়ারম্যানের শপথগ্রহণের অনুষ্ঠানে দার্জিলিঙে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। ঘটনাচক্রে সেই সময় পাহাড়েই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। দার্জিলিঙের রাজভবনে রাজ্যপাল তাঁকে ডেকে চা-বিস্কুট খাইয়েছিলেন। সেই সাক্ষাতেই দেখা মিলেছিল অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মারও। তিন জনে এক সঙ্গে বসে চা খাচ্ছেন, সেই ছবিও পোস্ট করেছিলেন রাজ্যপাল ধনখড়।
তৃণমূলে দলগত ভাবে ধনখড়ের প্রবল বিরোধিতা করলেও প্রত্যাশিত ভাবেই ধনখড় সমর্থন পেয়েছেন বিরোধী বিজেপির থেকে। রাজ্যের ভঙ্গুর গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি জনগণের রাজ্যপাল হিসেবে কাজ করছেন বলে দাবি গেরুয়া শিবিরের। সম্প্রতি কালী বিতর্কের সময় বিরোধী দলনেতা সাধুদের নিয়ে রাজভবনে ঢুকে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন। সেই অনুষ্ঠানে রাজ্যপালও রাজ্য সরকারকে বিঁধে বক্তব্য দিয়েছিলেন। এই ঘটনায় রাজ্যপালের তীব্র সমালোচনা করেছিল তৃণমূল, কংগ্রেস ও বামেরা। রাজভবনকে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির আখড়া তৈরি করছেন বলে ধনখড়কে আক্রমণ করেছিল বাম, কংগ্রেসও।
এই প্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠছে, পশ্চিমবঙ্গের পরবর্তী রাজ্যপাল কে হবেন?