ছবি পিটিআই।
সেনায় অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে জওয়ান নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক এখনও তাজা। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জওয়ানদের প্রতি অসংবেদনশীলতার অভিযোগ তুলেছেন ওই প্রকল্পের বিরোধিতায় সরব হওয়া যুব সমাজ ও বিরোধীদের একাংশ। এই আবহে আজ কার্গিল যুদ্ধজয়ের ২৩তম বর্ষপূর্তিতে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা দাবি করলেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার সেনার সার্বিক উন্নয়নে যথাসম্ভব পাশে রয়েছে। তিনি একা নন, কার্গিল বিজয় দিবসকে সামনে রেখে জাতীয়তাবাদের শিঙা বাজাতে মাঠে নেমে পড়েছিলেন গোটা বিজেপি নেতৃত্ব।
গত জুন মাসে সেনায় জওয়ান পদে চুক্তিভিত্তিক চার বছরের জন্য নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদী সরকার। সেনায় পাকা চাকরির সুযোগ কার্যত চলে যাওয়ায় পথে নামে বেকার যুব সমাজের একাংশ। ওই প্রকল্পের প্রতিবাদে সরব হন প্রাক্তন সেনাকর্তাদের একাংশও। অগ্নিপথ প্রকল্প ঘিরে বিতর্কের আবহে আজ কার্গিল দিবসের মঞ্চকেই বার্তা দেওয়ার জন্য বেছে নেন জে পি নড্ডা। তিনি অগ্নিপথ প্রকল্পের সরাসরি নাম না নিলেও, দলীয় মঞ্চ থেকে সেনা-জওয়ানদের উদ্দেশে বার্তায় নড্ডা বলেন, ‘‘মোদী সরকার যে কোনও পরিস্থিতিতে সেনার পাশে রয়েছে। সেনার পরিকাঠামোগত মানোন্নয়নে সরকার বদ্ধপরিকর।’’ তিনি দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদী সরকার ২০১৪ সালে যখন ক্ষমতায় আসে তখন আধুনিকীকরণের প্রশ্নে সেনা কুড়ি বছর পিছিয়ে গিয়েছিল। তাই দায়িত্ব নিয়েই আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, গোলা-বারুদ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের সঙ্গে আধুনিক হেলিকপ্টার, বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র কেনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
কেবল আধুনিকীকরণই নয়, নীতি নির্ধারণের প্রশ্নেও ইউপিএ সরকারের দীর্ঘসূত্রিতার মনোভাবের সমালোচনা করেছেন নড্ডা। তাঁর কথায়, ‘‘অতীতে পাকিস্তান সীমান্ত থেকে ভারতের পোস্ট লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হলে পাল্টা জবাব দিতে দিল্লির অনুমতি নিতে হত। কিন্তু এখন সোজা গুলির বিনিময়ে গুলিতে জবাব দিতে বলা হয়েছে।’’ আজ নিজের বক্তব্যে ইউপিএ-র সময়কার প্রতিরক্ষা নীতিকে নিশানা করতে ছাড়েননি নড্ডা। আজ কারও নাম না করে নড্ডা বলেন, ‘‘চিন রুষ্ট হতে পারে সেই আশঙ্কায় সীমান্তে ভারত স্থায়ী কাঠামো তৈরি করে না, এই কথা সংসদে স্বীকার করেছিলেন ইউপিএ-র এক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।’’ নড্ডার দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সেই দুর্বলতা প্রতিরক্ষা নীতিতেও প্রতিফলিত হতে শুরু করেছিল।’’ কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বর্তমান ভারত আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে শক্তিশালী চেহারায় আত্মপ্রকাশ করেছে।
কার্গিল বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানকে সামনে রেখে মূলত জাতীয়তাবাদের রাজনীতি নতুন করে উস্কে দেওয়ার কৌশল নেন বিজেপি নেতৃত্ব। দলের বিভিন্ন নেতাদের নিজেদের রাজ্যে কার্গিল বিজয় দিবস পালনের নির্দেশ দিয়েছিল দল। দিল্লিতে সেনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইট করে লেখেন, ‘‘কার্গিল দিবস মা ভারতী-র গর্বের দিন।’’ জাতীয় যুদ্ধ স্মারকে সশস্ত্র বাহিনীর তিন প্রধানের উপস্থিতিতে শ্রদ্ধা জানান রাজনাথ সিংহ। শহিদদের শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, স্পিকার ওম বিড়লা।