দেশবাসীকে খোলা চিঠি নড্ডার। ফাইল চিত্র
দেশে ‘নিম্নমানের’ রাজনীতি করছেন বিরোধীরা। ভোটব্যাঙ্কের লক্ষ্যে ‘দেশের আত্মায় আঘাত হানার’ চেষ্টা হচ্ছে। এই ভাষাতেই বিরোধীদের আক্রমণ করলেন বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডা। রামনবমীর শোভাযাত্রা কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে উত্তেজনা তৈরি হওয়ার পরে গত শনিবারই সনিয়া গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ দেশের ১৩টি দলের শীর্ষ নেতানেত্রীরা দেশবাসীর উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি লেখেন। সেই চিঠিতে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানানোর পাশাপাশি বিভাজনের রাজনীতি রোখার প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রীর নীরব দর্শকের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করা হয়। সোমবার দীর্ঘ তিন পাতার চিঠিতে তারই জবাব দিয়েছেন নড্ডা। সেখানে আত্মপক্ষ সমর্থনের পাশাপাশি নড্ডার দাবি, বিজেপির তুলনায় কংগ্রেস জমানায় দেশে ধর্মীয় কারণে উত্তেজনার সংখ্যা বেশি ছিল। চিঠিতে তৃণমূলের নাম করলেও বাংলায় বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হত্যার অভিযোগ তুলেছেন। একই ভাবে কেরলে সন্ত্রাস চলছে বলে আক্রমণ করেছেন বামেদের।
এরই জবাবি চিঠিতে নড্ডা লিখেছেন, ‘নরেন্দ্র মোদী সরকারের সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস এবং সবকা প্রয়াসের নীতিতে ভারত উন্নতির পথে এগোচ্ছে। তাতেই হতাশ বিরোধীরা। দেশের মানুষ নিম্নমানের, ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। গত ৮ বছরে ভারতের রাজনীতি বদলে গিয়েছে।’ তাঁর দল অন্য রকম রাজনীতিতে বিশ্বাসী দাবি করে নড্ডা লেখেন, ‘আজ ভারতে দু’ধরনের রাজনীতি দেখা যাচ্ছে। এক দিকে এনডিএ-র উন্নয়নমূলক রাজনীতি আর অন্য দিকে, বিরোধী দলগুলির নিম্নমানের রাজনীতি।’
অন্যান্য দলের পাশাপাশি কংগ্রেসকে আলাদা করেও আক্রমণ করেছেন নড্ডা। কংগ্রেস জমানায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ধর্মীয় উত্তেজনার কথা তুলে ধরেছেন তিনি। ইন্দিরা গাঁধী থেকে রাজীব গাঁধীর আমলে কোথায় কোথায় উত্তেজনার পরিবেশ দেখা গিয়েছে, তার ফিরিস্তি দিয়েছেন তিনি। রাজস্থানের কারোলের হিংসা নিয়ে কংগ্রেস কেন চুপ, সে প্রশ্নও তুলেছেন নড্ডা।
গত শনিবার বিরোধীদের পক্ষে লেখা চিঠিতে সনিয়া, মমতা ছাড়াও এমকে স্ট্যালিন, তেজস্বী যাদব, সীতারাম ইয়েচুরি, শরদ পওয়াদের নাম ছিল। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ২০২৩ সালে গুজরাত-সহ একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট রয়েছে। সামনেই রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে বিরোধীদের ওই চিঠির অন্য তাৎপর্যও রয়েছে। চিঠিতে এমন রাজনৈতিক বার্তাও রয়েছে যে, দীর্ঘ দিন পরে কোনও একটি বিষয়ে এক ছাতার তলায় এল কংগ্রেস, বাম, তৃণমূল, ডিএমকে, এনিসিপির মতো দলগুলি। বিরোধীদের এই ঐক্যবদ্ধ চেহারাকে যে বিজেপি অবহেলা করছে না সেটাও বুঝিয়ে দিল নড্ডার চিঠি।