অমিত শাহের পশ্চিমবঙ্গ সফরের আগে দিলীপের সঙ্গে বৈঠক করলেন নড্ডা। ফাইল চিত্র।
গোষ্ঠী-কোন্দলে দীর্ণ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতৃত্ব। এই আবহে আগামী মাসের শুরুতে বাংলায় যাওয়ার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। সরকারি সফরের সঙ্গে তিনি বৈঠক করবেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গেও। তাঁর ওই সফরের আগে পশ্চিমবঙ্গে দলের সামগ্রিক চিত্রটি বুঝে নিতে আজ প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা।
দু’বছর পরে দেশে লোকসভা নির্বাচন। অথচ গত নির্বাচনে বিজেপি যে আশাতীত ফল রাজ্যে করেছিল, বর্তমান টালমাটাল অবস্থায় তা ধরে রাখা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দীর্ঘ সময় ধরেই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপ চাইছিলেন রাজ্য নেতাদের একাংশ। ঠিক ছিল, এ মাসের শেষে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পশ্চিমবঙ্গে যাবেন নড্ডা। কিন্তু সেই সফর আপাতত পিছিয়ে গিয়েছে। পরিবর্তে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে সরকারি কর্মসূচির অঙ্গ হিসাবে রাজ্যে যাওয়ার কথা রয়েছে অমিত শাহের। বিজেপি সূত্রের মতে, ওই সফরে গিয়ে প্রথমে উত্তরবঙ্গ এবং তার পরে কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসতে পারেন শাহ। লক্ষ্য, দলের বিবদমান গোষ্ঠীগুলিকে সঙ্ঘবদ্ধ করে শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াইকে মজবুত করা।
শাহের সেই সফরের আগে আজ রাজ্যের পরিস্থিতি বুঝতেই দিলীপকে ডেকে পাঠান নড্ডা। দিলীপ দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি। বর্তমান রাজ্য সভাপতির বদলে প্রাক্তনকে ডেকে পাঠানো রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। যদিও বিজেপি সূত্রের বক্তব্য, সংসদীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে গত কাল দিল্লি এসেছিলেন দিলীপ। আজ সকালে তাঁর রাজ্যে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলার পরিস্থিতি বুঝতে নড্ডা তাঁর সঙ্গে বসতে চান বলে আজ বার্তা পাঠানো হয় দিলীপকে। তার পরেই কলকাতায় ফেরা বাতিল করেন দিলীপ। সূত্রের মতে, এ দিন বিকেলে দলের সদর দফতরে হওয়া বৈঠকে রাজ্য বিজেপির অভ্যন্তরীণ গন্ডগোলের বিষয়ে নড্ডাকে বিস্তারিত ভাবে অবহিত করেন তিনি।
সূত্রের খবর, রাজ্য বিজেপিতে গোলমালের নেপথ্যে বর্তমান রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে জানতে চান নড্ডা। প্রসঙ্গত, খোদ দিলীপের বিরুদ্ধেই বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীকে মদত দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। রাজ্যের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের পারস্পরিক সম্পর্ক, উপনির্বাচনগুলিতে হারের কারণ, রাজ্য সরকারের ‘প্রশাসনিক ব্যর্থতা’ সত্ত্বেও সরকার-বিরোধী আন্দোলনের গতি না পাওয়ার মতো বিষয়গুলি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। সূত্রের দাবি, পশ্চিমবঙ্গের গোলমাল নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ওয়াকিবহাল। দল চাইছে দ্রুত বিষয়টির সমাধান করতে। কেন্দ্রীয় নেতাদের সফরের আগে তাই পরিস্থিতি বুঝে নিতে চাইছেন নড্ডা।