কংগ্রেসের ১৩৫তম প্রতিষ্ঠা দিবসে শনিবার দিল্লিতে সনিয়া গাঁধী, গুয়াহাটির জনসভায় রাহুল গাঁধী। ছবি: পিটিআই।
গত এক বছরে পাঁচ রাজ্যে বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পেরে কংগ্রেস নেতৃত্ব কিছুটা মনোবল ফিরে পেয়েছেন ঠিকই। কিন্তু মহারাষ্ট্র থেকে ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে কংগ্রেস আঞ্চলিক দলের ছোট শরিকে পরিণত হয়েছে। জাতীয় স্তরেও বিরোধী শিবির এখনই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সনিয়া-রাহুল গাঁধীর কংগ্রেসের নেতৃত্ব মেনে নিতে নারাজ। কংগ্রেসের দলের মধ্যেও নেতৃত্বে সঙ্কট রয়েছে।
দলের ১৩৫তম প্রতিষ্ঠা দিবসে সেই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েই শনিবার কংগ্রেস নেতারা চেষ্টা করলেন, কোথায় কোথায় তাঁরা বিজেপির চেয়ে আলাদা, তা বোঝাতে। নয়া নাগরিকত্ব আইন বা এনআরসি-র মাধ্যমে বিজেপি সরকার মুসলিমদের সঙ্গে বৈষম্যের নীতি নিচ্ছে, ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করছে বলে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। আজ কংগ্রেস নেতারা তাই মূলত তিনটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। এক, সংবিধানের মতোই কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ নীতি। দুই, দেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে কংগ্রেসের ভূমিকা। তিন, স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকা। এই তিনটি ক্ষেত্রেই বিজেপি-আরএসএসের সঙ্গে কংগ্রেসের মূল ফারাক বলে আজ বোঝাতে চেয়েছেন কংগ্রেসের নেতারা।
আরও পড়ুন: ক্যানসার নিয়েই লড়ছেন ৭৬ বছরের প্রাক্তন আইজি দারাপুরী
শীতের সকালে এআইসিসি সদর দফতরে কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী দলীয় পতাকা উত্তোলনের পরে প্রবীণ নেতারা অবশ্য মনে করিয়ে দিয়েছেন, দলের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্নেরও সমাধান খোঁজা দরকার। রাহুল সভাপতির পদ ছাড়ার পরে সনিয়াকে ফের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিতে হয়েছে। রাহুলকে ফের ফিরিয়ে আনার আলোচনাও শুরু হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসের প্রবীণ নেতাদের মতে, দলের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জোরালো অবস্থান নেওয়া। রাজনৈতিক ভাবে একদিকে কংগ্রেসের নিজস্ব সংগঠনের জোর বাড়াতে হবে। অন্য দিকে জোট রাজনীতিতে ভারসাম্য রাখতে হবে। রাজ্যে রাজ্যে কংগ্রেস ছোট শরিকের ভূমিকায় চলে গেলে জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের পক্ষে বিজেপি-বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া মুশকিল হবে।
সিএএ ও এনআরসি-কে গরিব- বিরোধী বলে তুলে ধরার রণকৌশল আগেই নিয়েছিল কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী ফের সেই সুরেই মোদী সরকারকে নিশানা করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এনপিআর, এনআরসি গরিব মানুষকে নোট বাতিলের দ্বিগুণ ধাক্কা দেবে। এর প্রধান উদ্দেশ্যই হল, গরিব মানুষকে প্রশ্ন করা তাঁরা ভারতীয় কি না? কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর ১৫ জন পুঁজিপতি বন্ধুকে কোনও কাগজ দেখাতে হবে না।’’
রাহুল আজ দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে অসমে সিএএ-এনআরসি-র বিরুদ্ধে জনসভায় অংশ নিয়েছিলেন। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা গিয়েছিলেন লখনউ। সেখানে প্রিয়ঙ্কা বলেন, ‘‘দেশে এখন যারা ক্ষমতায়, তাদের সঙ্গে আগেও সংঘাত হয়েছে।’’