ফাইল চিত্র
আগামী ২৬ মে আট বছরে পা দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোদী সরকারের যাত্রার ইতিবাচক দিকগুলি তুলে ধরে জনতার সামনে রিপোর্ট কার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ‘মোদী সরকারের আট বছর’ নামে ওই রিপোর্ট কার্ড আগামী মাসে প্রকাশ করার পরিকল্পনা নিয়েছে দল।
প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, আট বছরে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত যেমন জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, করোনা কালে গরিবদের বিনামূল্যে রেশন, দেশের মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা প্রতিষেধক, নমামি গঙ্গে প্রকল্পের মাধ্যমে গঙ্গার সংস্কার, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা নীতি ও তার সুফল রিপোর্ট কার্ডের মাধ্যমে তুলে ধরা হবে। বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘সরকারের সাফল্য তুলে ধরার সঙ্গেই সরকারি প্রকল্পের সুবিধা কারা পেতে পারেন, তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করাও পরিকল্পনার অঙ্গ। যাতে তৃণমূল স্তরের মানুষ জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা পেতে পারেন।’’ ওই রিপোর্ট তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, দলের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহ, সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশকে। আগামী মাসের শুরুতে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডাকে ওই রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি।
তবে বিরোধীরা তো বটেই, সরকারের সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বিজেপির রাজ্যসভা সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তাঁর টুইট, ‘‘আট বছর ক্ষমতায় থেকে মোদী সরকার আর্থিক বৃদ্ধির যে লক্ষ্য নিয়েছিল তা ছুঁতে ব্যর্থ হয়েছে। উল্টে আর্থিক বৃদ্ধির হার গত ২০১৬ সালের পর থেকে নিম্নমুখী। জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে একাধিক দুর্বলতা দেখা গিয়েছে। চিন প্রশ্নে কার্যত ব্যর্থ মোদী। উন্নতি করার সুযোগ থাকলেও, মোদী কি আদৌ জানেন, কোন পথে তা হতে পারে।’’
বিরোধীরাও মনে করছেন, দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা, ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতা, পেট্রোপণ্যের আকাশ ছোঁয়া দামের কারণে সব স্তরের মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। আর্থিক মন্দার কারণে কাজ হারিয়েছেন দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রের বড় সংখ্যক মানুষ। মোদী সরকারের আমলেই বেকারত্ব গত ৪৫ বছরের মধ্যে শিখরে পৌঁছেছে। বিরোধী ১৩ দলের নেতা-নেত্রীদের অভিযোগ, এই সব প্রকৃত সমস্যা থেকে মুখ ঘোরাতেই মেরুকরণের রাজনীতি করে সমাজকে বিভাজনের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে মোদী সরকার। যদিও ওই অভিযোগ নস্যাৎ করে বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘‘ভারতের মতো দেশে করোনা-কালে এক জন মানুষও না খেতে পেয়ে মারা যাননি। দেশের প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ বিনামূল্যে দু’টি করে কোভিডের টিকা পেয়েছেন। আগের চেয়ে শান্ত হয়ে গিয়েছে কাশ্মীর। এই সময়ে এর থেকে বড় সাফল্য আর কী হতে পারে!’’