Pragya Singh Thakur

‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে নিয়ে যান বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা, মুসলিম প্রেমিককে নিয়ে উধাও সেই তরুণীই

তরুণী পেশায় নার্স। প্রতিবেশী ইউসুফের সঙ্গে তাঁর প্রেম। এ নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল তরুণীর পরিবারের। স্থানীয় বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ দায়িত্ব নেন তাঁকে বুঝিয়ে ‘সুপথে’ আনার।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

ভোপাল শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২৩ ১৩:০৯
Share:

ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর। — ফাইল ছবি।

১৯ বছর বয়সি তরুণীর মাথা থেকে ‘প্রেমের ভূত’ নামাতে কত চেষ্টাই না করেছিলেন মধ্যপ্রদেশের ভোপালের বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ ঠাকুর! এমনকী নিজে তাঁকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন বিতর্কিত ছবি ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। বুঝিয়েছিলেন ‘লভ জিহাদ’-এর তত্ত্বও। কিন্তু সব চেষ্টায় জল ঢেলে, পরিবারের ঠিক করা বিয়ের আগেই সেই তরুণী পালিয়ে গেলেন মুসলিম প্রেমিকের সঙ্গে। উদ্যোগ বিফলে যাওয়ায় মুষড়ে পড়েছেন বিজেপির বিতর্কিত নেত্রী। তবে জানিয়েছেন, হাল তিনি ছাড়বেন না। ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে তাঁর ‘জিহাদ’ চলবেই।

Advertisement

১৯ বছরের ওই তরুণী পেশায় নার্স। থাকতেন ভোপালের নয়া বসেরা এলাকায়। প্রতিবেশী ইউসুফের সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক অনেক দিনের। এই প্রেম নিয়ে আপত্তি ছিল তরুণীর পরিবারের। কিন্তু নানা ভাবে বুঝিয়ে, চাপ দিয়েও মন বদলাতে পারা যায়নি মেয়ের। স্থানীয় বিজেপি সাংসদ প্রজ্ঞা সিংহ এই সব জানতে পেরে নিজে দায়িত্ব নেন তাঁকে বুঝিয়ে ‘সুপথে’ আনার। শুধু মুখে বোঝানোই নয়, নিজে ওই তরুণীকে দেখাতে নিয়ে যান ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিটি। তাঁর আশা ছিল, চোখের সামনে ‘সত্য ঘটনা’ দেখলে মেয়ের মন বদলাবেই।

‘দ্য কেরালা স্টোরি’ ছবিতে দেখানো হয়েছে, কেরলের বাসিন্দা এক তরুণীর মগজ ধোলাইয়ের পর তিনি ধর্ম পরিবর্তন করে মুসলিম হন। তার পর তাঁকে সিরিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে জঙ্গি সংগঠন আইএস-এ যোগ দেন তিনি। এই চরিত্রটিতে অভিনয় করেছেন অদা শর্মা। ছবির টিজ়ার বেরোনোর পর থেকেই তা বিতর্কের বিষয় হয়ে উঠেছে।

Advertisement

ভোপালের তরুণীর মন যে ওই ছবি দেখার পরও বদলায়নি, তা সম্ভবত বুঝে উঠতে পারেননি তাঁর ‘হিতাকাঙ্ক্ষীরা’। পরিবারের পছন্দ করা পাত্রের সঙ্গে (হিন্দু পাত্র বলাই বাহুল্য) বিয়ে ঠিক করে ফেলা হয়। বিয়ের দিন ছিল গত ৩০ মে। কিন্তু তার ঠিক আগেই প্রেমিক ইউসুফের সঙ্গে পালিয়ে যান তরুণী। এর পরেই তরুণীর বাড়ির লোকেরা থানায় মেয়ের নামে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। অভিযোগ করেন, মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে বাড়ির মেয়েকে ফুসলিয়ে পালাতে বাধ্য করেছেন ইউসুফ। এ ছাড়াও ইউসুফের বিরুদ্ধে আরও বিভিন্ন অভিযোগ আনে তরুণীর পরিবার। অভিযোগ করে, বিয়ের জন্য যে নগদ এবং গয়না বাড়িতে এনে রাখা হয়েছিল, পালানোর আগে সে সবও নিয়ে গিয়েছেন তরুণী।

পরিবারের দাবি অবশ্য নস্যাৎ করে দিয়েছেন তরুণী নিজে। পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন যুগল। তরুণী পুলিশকে দেওয়া জবানবন্দিতে জানিয়েছেন, তিনি স্বেচ্ছায় ইউসুফের সঙ্গে বাড়ি ছেড়েছেন। সারা জীবন তাঁর সঙ্গেই থাকতে চান।

হতাশ হয়েও, সাংসদ প্রজ্ঞা অবশ্য তাঁর ‘লভ জিহাদ’ বিরোধী অভিযান চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা করেছেন। সোমবার রাতে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘ছোট ছোট মেয়েরা অবোধ। তারা বুঝতে পারছে না যে তাদের জীবন আর সুরক্ষিত নেই। তাদের জীবন বাঁচাতে আমি দৃঢ় ভাবে এগিয়ে আসবই। লভ জিহাদের চক্করে ফেঁসো না এবং মা-বাবাকে সম্মান করো। তাঁদের কথায় ভরসা রাখো।’’ অর্থাৎ, আদাবে আর নমস্কারে একই সঙ্গে ভরসা রাখতে কিছুতেই রাজি নন প্রজ্ঞারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement