উত্তরপ্রদেশের বিজেপি বিধায়ক রাকেশ রাঠৌর। ছবি: সংগৃহীত।
যোগী আদিত্যনাথের আমলে উত্তরপ্রদেশের বিধায়কদের কোনও ক্ষমতাই নেই। সোমবার এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন যোগীর নিজের দলেরই বিধায়ক রাকেশ রাঠৌর। সেই সঙ্গে রাকেশের দাবি, সংবাদমাধ্যমের কাছে বেশি কথা বললে তাঁর বিরুদ্ধে হয়তো দেশদ্রোহিতার মামলা ঠুকে দিতে পারে যোগীর বিজেপি সরকার।
রাকেশের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উত্তরপ্রদেশের ‘বেহাল’ স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ক্ষুব্ধ সীতাপুরের এই বিজেপি বিধায়ক। সীতাপুরে একটি ট্রমা সেন্টারের আবেদন করেও তা চালু করতে পারেননি। এ নিয়ে লখনউতে যোগী সরকারের মন্ত্রী-আধিকারিকদের কাছে দরবার করেও সুরাহা মেলেনি। সীতাপুর জেলার হাসপাতালগুলির বেহাল দশা নিয়েও ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাকেশ। সোমবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে যোগীর নাম না করে তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। রাকেশ বলেন, “আমি চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু সরকার তো নই। যিনি সরকার, তিনিই ঠিক কথা বলেন। আমাদের মতো বিধায়কদের কী ক্ষমতা? বেশি কথা বললে দেশদ্রোহিতার মামলা ঠুকে দেবে।”
রাকেশের মতোই যোগীর সমালোচকদের দাবি, উত্তরপ্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই দেশদ্রোহিতার মুখে পড়তে হয়। তবে কি যোগী-রাজ্যে বিধায়কদের কোনও ক্ষমতাই নেই? সংবাদমাধ্যমের এই প্রশ্নের মুখে রাকেশের সাফ জবাব, “আপনাদের মনে হয় যে বিধায়কেরা তাঁদের মনের কথা খোলাখুলি বলতে পারেন? আপনারা তো জানেন, এর আগেও আমি বহু প্রশ্ন তুলেছিলাম।”
এই প্রথম নয়, বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে এর আগেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন রাকেশ। গত বছরের এপ্রিলে একটি ভাইরাল ভিডিয়োতে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেই তোপ দেগেছিলেন তিনি। করোনাকে হঠাতে এবং কোভিড-যোদ্ধাদের ধন্যবাদ দিতে মোদীর ‘তালি ও থালি বাজাও’ আবেদনকে ‘মূর্খামির চূড়ান্ত নমুনা’ বলেও সমালোচনা করেন রাকেশ। তাঁকে সে জন্য শোকজও করেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সেই ‘অনুশাসনে’র পরও থামেননি রাকেশ। যোগীর বিরুদ্ধে মুখ খুলে তিনি বলেছেন, “আমি বেশি কিছু চাই না। সীতাপুরে একটা ট্রমা সেন্টারের দাবি করেছি। তার জন্য বিল্ডিং অনুমোদিতা হলেও সেন্টারটি চালু হয়নি। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠিও লিখেছিলাম। তবে কাজ হয়নি। করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কী ভাবে পরিষেবা পাবে?”