ছবি: পিটিআই।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে গোটা দেশে উদযাপিত করে তাতে নিজের সিলমোহর বসাতে চান বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনটাই মনে করছে দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এর আগেই ‘অম্রুত মহোৎসব’ পালনের কথা বলে স্বাধীনতার ৭৫ বছরের হাওয়া তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ তাঁর ‘মন কি বাত’ রেডিয়ো অনুষ্ঠানে এ বিষয়ে তাঁর মন স্পষ্টও করেছেন দেশবাসীর কাছে। ইঙ্গিত দিয়েছেন, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতেও যাতে স্বাধীনতা সংগ্রামে নিয়ে আলোচনা শুরু হয় সে বিষয়ে সক্রিয় হবে তাঁর সরকার।
আজ প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, “নিজের এলাকায় দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কথা লিখুন। তাঁদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ঘটনাবলির কথা তুলে ধরুন, যা এর আগে কখনও সামনে উঠে আসেনি। আপনাদের এই লেখাই হবে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের যোদ্ধাদের প্রতি আদর্শ শ্রদ্ধাজ্ঞাপন।”
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সর্দার বল্লভভাই পটেল থেকে মোহনদাস গাঁধী অথবা নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু— স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু কিংবদন্তিকে নিজেদের রাজনীতির সঙ্গে চিহ্নিত করেছেন নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে বিজেপি তথা সঙ্ঘ পরিবারের কোনও অবদান নেই এই অভিযোগ হামেশাই তোলেন বিরোধীরা। আবার স্বাধীনতার পরে গাঁধীজির হত্যার সঙ্গে তাদের যোগাযোগের অভিযোগও নতুন নয়। তার মধ্যে রয়েছে দলীয় আইকনের অভাব। কংগ্রেসের অভিযোগ, আইকনের অভাব ঢাকতে কখনও সর্দার পটেল কখনও অম্বেডকরকে ধরে টানাটানি করতে হয়। আসলে বিজেপি, সঙ্ঘ পরিবার বা তাদের পূর্বসূরিরা কোনও দিন স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশ নেননি। তাঁরা সে সময়ে ব্রিটিশদেরই সাহায্য করতেন। বিরোধীদের এই অভিযোগকে গত ছ’বছরে উড়িয়ে দিতেই দেখা গিয়েছে মোদীকে। তা-ই নয়, এ বার স্বাধীনতা সংগ্রামের আবেগদীপ্ত হাওয়াকে জাতীয়তাবাদ ও দেশপ্রেমের পালে লাগাতে সক্রিয় তিনি এবং তাঁর দল। ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে কেন্দ্র করে যে ‘মহোৎসব রচনা’ করবে তাঁর সরকার, তার সূচনা এখন থেকেই শুরু করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী। আজ দেশবাসীর উদ্দেশে তিনি বলেছেন, “ভারতের সব জায়গায়, সব মফস্সল এবং গ্রামে স্বাধীনতার লড়াই সমস্ত শক্তি দিয়ে লড়া হয়েছিল। ভারতের প্রতিটি অঞ্চলে এমন মহান পুত্র ও বীরাঙ্গনাদের জন্ম হয়েছে, যাঁরা রাষ্ট্রের জন্য জীবনদান করেছেন। আমাদের উচিত তাঁদের সংগ্রাম এবং স্মৃতিকে সম্মানের সঙ্গে বাঁচিয়ে রাখা।”