বেঙ্গালুরুর সাংসদ তেজস্বী সূর্য ফাইল চিত্র।
এমনিতেই হরিদ্বারের ধর্ম সংসদে উস্কানিমূলক বক্তৃতা নিয়ে সারা দেশ তোলপাড়। তার উপর ২৫ ড়িসেম্বর দেশের নানা জায়গায় গির্জায় তাণ্ডব এবং ভাঙচুরের ঘটনায় কাঠগড়ায় বিজেপি-ঘনিষ্ঠ উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। তা নিয়ে বিদেশেও সমালোচনা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই বিজেপির যুবনেতা ও বেঙ্গালুরুর সাংসদ তেজস্বী সূর্যের একটি মন্তব্যে হিন্দু বনাম হিন্দুত্ববাদী বিতর্ক আরও বাড়ল। দলের চাপে অবশ্য মন্তব্যটি প্রত্যাহারও করলেন তিনি। সূত্রের খবর, গোয়া বিধানসভা ভোটের আগে সেখানকার বড় সংখ্যক খ্রিস্টান ভোটারদের কথা ভেবেই তেজস্বীকে মন্তব্য প্রত্যাহার করতে চাপ দেন বিজেপি নেতৃত্ব। তার পরেই সুর নরম করেন বেঙ্গালুরুর এই সাংসদ।
গত শনিবার উদুপির একটি মঠে বক্তৃতা দিতে গিয়েছিলেন তেজস্বী। সেই বক্তৃতাতেই তেজস্বী বলেন, ‘‘এ দেশে অনেকেই রয়েছেন, যাঁরা হিন্দু ধর্ম ছেড়ে ইসলাম বা খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁদের সকলকে ফের হিন্দু ধর্মের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’’ একই সঙ্গে তিনি জানান, দেশের সমস্ত মঠ ও মন্দিরের দায়িত্ব হল, অন্য ধর্মে চলে যাওয়া মানুষদের ফের হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে আনা।
এমনিতেই দিল্লি এবং হরিদ্বারের উস্কানিমূলক বক্তব্যের রেশ থাকতে থাকতেই বড়দিনের আবহে একাধিক বিজেপি-শাসিত রাজ্যে হিন্দুত্ববাদীরা বেপরোয়া হামলা চালিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা ও অসমে মোট ৭টি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে। অম্বালার ১৭৩ বছরের পুরনো একটি গির্জার প্রবেশপথের জিশুমূর্তি ভেঙে দিয়েছে হামলাকারীরা। উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের পরে কর্নাটকেও পাশ করানো হয়েছে ধর্মান্তররণ বিল। নতুন এই আইনের একাধিক ধারা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন।
সামনেই গোয়ার বিধানসভা নির্বাচন। গোয়ার ভোটারদের একটা বড় অংশ খ্রিস্টান। তেজস্বীর এই ধরনের বক্তব্যে সেই ভোট হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয় বিজেপির অন্দরে। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের থেকে কম আসন পেলেও গোয়ায় নানা দল ভাঙিয়ে সরকার গঠন করতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি। এ বার সেখানে কংগ্রেস ছাড়াও লড়াইয়ে রয়েছে আম আদমি পার্টি ও তৃণমূল। এই অবস্থায় দলের চাপের মুখে সোমবার টুইটারে নিজের বক্তব্য প্রত্যাহার করেন তেজস্বী। তিনি জানিয়েছেন, “দু’দিন আগে উদুপির শ্রীকৃষ্ণ মঠে ভারতে হিন্দুদের পুনরুত্থান নিয়ে একটি বক্তব্য রেখেছিলাম। দুঃখজনক ভাবেই সেই বক্তব্যের কিছু অংশ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। আমি আমার সমস্ত বক্তব্য নিঃশর্ত ভাবে প্রত্যাহার করে নিলাম।”
এর আগেও তেজস্বীর বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে পড়েছে বিজেপি নেতৃত্ব। এ বছরের শুরুতে তামিলনাড়ুর নির্বাচনের সময়ে তেজস্বী বলেছিলেন, বিজেপির উদ্দেশ্য তামিলনাড়ুর ‘পেরিয়ারিজ়ম’ শেষ করা।