কমল নাথ ও শিবরাজ সিংহ চহ্বাণ। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
মুলতুবি মধ্যপ্রদেশের বাজেট অধিবেশন। তার জেরে আপাতত থমকে আস্থা ভোট প্রক্রিয়া। আর তা নিয়ে কংগ্রেস ও বিজেপির রাজনৈতিক যুদ্ধ গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। বুধবার সেই মামলার শুনানিতেই কংগ্রেস আবেদন জানাল, ‘বিদ্রোহী’ ২২ কংগ্রেস বিধায়ক নতুন করে ভোটে জিতে আসুন, তার পরই আস্থা ভোট হবে।
এ দিন শীর্ষ আদালতে বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও হেমন্ত গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। কংগ্রেসের আইনজীবী দুষ্যন্ত দাভে আদালতে অভিযোগ করেন, বিজেপি অর্থ ও পেশি শক্তি ব্যবহার করে ‘গণতন্ত্রকে হাইজ্যাক করছে।’ রাজ্যপাল লালজি টন্ডন আস্থা ভোটের জন্য যে নির্দেশ দিয়েছেন তা-ও ‘অসাংবিধানিক’ বলে আদালতকে জানিয়েছেন দুষ্যন্ত। বিজেপি অবশ্য পাল্টা দাবি তুলেছে, মধ্যপ্রদেশের তখতে থাকার কোনও ‘নৈতিক, আইনি ও সাংবিধানিক অধিকার’ নেই কমল নাথ সরকারের।
মধ্যপ্রদেশে রাজনৈতিক টানাপড়েনের সূত্রপাত কয়েক দিন আগে, ২২ কংগ্রেস বিধায়কের ইস্তফা দেওয়ার পর। আর এর ফলেই সংখ্যালঘু হয়ে পড়েছে ১৫ মাসের কমল নাথ সরকার। সরকার আস্থা ভোটের পরীক্ষা দিক, প্রথম এই দাবি তোলে বিজেপি। সেই নির্দেশ দেন রাজ্যপাল লালজি টন্ডনও। কিন্তু পরিস্থিতি নাটকীয় মোড় নেয় যখন করোনা আতঙ্ককে সামনে রেখে আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত বিধানসভার অধিবেশন মুলতুবি করে দেন স্পিকার নর্মদাপ্রসাদ প্রজাপতি। এর পরই আস্থা ভোটের দাবি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। পাল্টা বিদ্রোহী বিধায়কদের ফেরাতে সুপ্রিম কোর্টে যায় কংগ্রেসও।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহী বিধায়কদের ফেরাতে গিয়ে বেঙ্গালুরুতে গ্রেফতার দিগ্বিজয়, সঙ্কটেই কমলনাথ সরকার
বেঙ্গালুরুর রামাদা হোটেলে রয়েছে ওই ‘বিদ্রোহী’ বিধায়করা। এ দিন সেখানে পৌঁছন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। সঙ্গে ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ডিকে শিবকুমারও। কিন্তু হোটেলে তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের সতর্কতামূলক হেফাজতে নেয় পুলিশ। হোটেল থেকেই কর্নাটক পুলিশের ডিজি-কে চিঠি লিখেছেন ‘বিদ্রোহী’রা। তাঁরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘তাঁদের সঙ্গে যেন কোনও কংগ্রেস নেতা বা সদস্যকে দেখা করার অনুমতি না দেওয়া হয়। তাঁদের জীবন ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কোনও ভয় নেই।’’
আরও পড়ুন: ছেলের করোনা, নবান্নে আমলার সহকর্মীদের থাকতে বলা হল বাড়িতে
‘বিদ্রোহী’ কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চৌধরী-সহ বাকিদের ‘বন্দি’ করে রেখেছে বিজেপি ও রাজ্যের পুলিশ। তাঁদের সত্ত্বর মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক। এই দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন মনোজের ভাই। তবে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই টানাপড়েনের মধ্যে জল্পনা উস্কে দিয়েছেন কমল নাথ নিজে। ‘প্রয়োজন পড়লে আমিই বেঙ্গালুরু যাব’, জানিয়ে দিয়েছেন মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।