ছবি: পিটিআই।
অধিবেশনের শুরু থেকেই আজ মন্ত্রীদের তাড়া দিচ্ছিলেন স্পিকার ওম বিড়লা। স্মৃতি ইরানি, বাবুল সুপ্রিয়দের বলছিলেন, প্রশ্নের জবাব সংক্ষিপ্ত করুন। দিনের ন’নম্বর প্রশ্নটি ছিল রাহুল গাঁধীর। তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র ওয়েনাডের মেডিক্যাল কলেজের দাবি নিয়ে। উত্তর দিতে গিয়ে নিয়মের বাইরে হাঁটলেন নরেন্দ্র মোদীর স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা দিল্লির বিজেপি নেতা হর্ষ বর্ধন।
ক’দিন আগে দিল্লি ভোটের প্রচারে বেকারত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেছিলেন, ‘‘ছয় মাস পর রোজগার না পেয়ে যুবকরা প্রধানমন্ত্রীকে লাঠিপেটা করবেন।’’ রোজগারের প্রসঙ্গটি এড়িয়েই মোদী গত কাল লোকসভায় রাহুলকে এ নিয়ে খোঁচা দিতে গিয়ে সূর্য নমস্কার করে পিঠ শক্ত করার কথা বলেছেন। সংসদে এ নিয়ে রাহুলকে আরও চেপে ধরার কৌশল আগেই তৈরি করেছিল বিজেপি। আজ রাহুল প্রশ্ন করতেই হর্ষ বর্ধন আগে থেকে লেখা এক বিবৃতি গড়গড় করে পড়তে শুরু করেন। প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাঠিপেটা’ মন্তব্যের নিন্দা করে রাহুলকে ক্ষমা চাইতে বলেন তিনি। প্রশ্নোত্তর পর্বে এমন নিয়ম-বিরুদ্ধ কাণ্ড দেখে হর্ষ বর্ধনের দিকে ধেয়ে যান কংগ্রেস সাংসদরা। রাহুল-অনুগামী তামিলনাড়ুর কংগ্রেস সাংসদ মনিকম টেগোর প্রায় হর্ষ বর্ধনের কাছে পৌঁছে যান। তাঁকে রুখতে ছুটে যান স্মৃতি ইরানি, প্রহ্লাদ জোশীরা। বিজেপির সাংসদ ব্রিজ ভূষণ শরণ সিংহ ধাক্কা দিয়ে সরান মনিকমকে। অবস্থা দেখে ছুটে আসেন কংগ্রেস সাংসদ হাইবি এডেন। এক ঘণ্টার জন্য সভা মুলতুবি করে দেন স্পিকার। স্পিকারের ঘরে গিয়ে মনিকমকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তোলেন সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী। পাল্টা রাহুল স্পিকারের কাছে অভিযোগ করেন, তাঁর অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। সংসদে তাঁকে বলতে দিতে হবে। হর্ষ বর্ধনকেও ক্ষমা চাইতে হবে। তার পর ক্ষমা চাইতে পারেন মনিকম। সংসদ থেকে বেরিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমি সংসদে বলি, বিজেপির তা পছন্দ নয়। সংসদের বাইরে করা আমার মন্তব্য নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কোনও লেনদেন নেই। প্রশ্নোত্তর পর্বে এই বিষয় তোলা পুরোপুরি অসংসদীয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর উপর নির্দেশ না থাকলে এটি করতেন না। প্রধানমন্ত্রী রোজগার নিয়ে জবাব দিতে পারছেন না বলে এ সব নাটক হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: মোদীর হাতিয়ার ব্যঙ্গাত্মক ‘খবর’!
অসমে পৌঁছে এ নিয়ে আসরে নামেন মোদী। আজও বেকারত্ব প্রসঙ্গ এড়িয়ে লাঠিপেটা প্রসঙ্গই তুললেন। যা শুনে কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘সাহেব, সূর্য নমস্কার করে পিঠ শক্ত করবেন, কিন্তু অর্থনীতি কবে শক্ত হবে? বেকারি কবে দূর হবে?’’