প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
মঙ্গলবার তৃতীয় মোদী সরকারের একশো দিন পূর্ণ হতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পা দিতে চলেছেন ৭৫ বছরে। তার আগে আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করলেন, তাঁর সরকার আগামী এক হাজার বছরের ভিত তৈরির কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রীর দাবি, শুধু শীর্ষে পৌঁছনোর লক্ষ্যে নয়, তা ধরে রাখার দিকেও তাঁর সরকার নজর দিচ্ছে।
মোদীর এই কথায় আজ বিরোধী শিবির ফের হিটলারের কথার ছাপ দেখতে পেয়েছে। হিটলারও বলতেন, তাঁর তৃতীয় রাইখ বা জার্মান শাসনের প্রভাব এক হাজার বছর থাকবে। কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আগেও এই হাজার বছরের কথা দু’বার বলেছেন। গত শতাব্দীতে কে এক হাজার বছরের রাইখের কথা বলেছিলেন? যে শাসনকাল ১২ বছরেই শেষ হয়ে যায়?”
নরেন্দ্র মোদী ভোটের আগেই আমলাদের নতুন সরকারের প্রথম ১০০ দিনের কর্মসূচি তৈরি করে রাখতে বলেছিলেন। মঙ্গলবার অমিত শাহ-সহ কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীরা প্রথম ১০০ দিনের কাজের তালিকা নিয়ে প্রচারে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিজেপি মনে করছে, প্রথম একশো দিনেই মোদী সরকার কী কী করে ফেলেছে, সেই প্রচারের সুফল জম্মু-কাশ্মীর ও হরিয়ানার ভোটেও মিলতে পারে। বুধবারই জম্মু-কাশ্মীরের প্রথম দফার ভোটগ্রহণ। আজ কংগ্রেস অভিযোগ তুলেছে, মোদী সরকারের প্রথম ১০০ দিন অস্থিরতা, সিদ্ধান্তহীনতার প্রতীক। প্রধানমন্ত্রীর আদৌ আগামী পাঁচ বছরের কোনও কর্মসূচি রয়েছে কি না, সেটাই সন্দেহ। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে বলন, ‘‘এই সরকার ইউ-টার্ন সরকার।’’
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য আজ থেকেই প্রথম ১০০ দিনের কাজের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। আজ গুজরাতে অপ্রচলিত শক্তি নিয়ে সম্মেলনে মোদী বলেন, ‘‘৬০ বছর পরে দেশের মানুষ কোনও সরকারকে টানা তৃতীয় বার ক্ষমতায় পাঠিয়েছে। ২০৪৭-এ ভারতকে উন্নত রাষ্ট্র করার যে লক্ষ্য, তার অ্যাকশন প্ল্যান নিয়ে আমরা কী ভাবে এগোচ্ছি, তার ট্রেলার প্রথম ১০০ দিনের কাজে দেখা গিয়েছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘প্রথম একশো দিনে আমাদের অগ্রাধিকার, গতি ও কাজের প্রসারে একটা প্রতিফলন দেখা যায়। সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকাঠামোয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। গোটা দেশে ৩ কোটি নতুন বাড়ি তৈরি করছি। গত ১০০ দিনে ১২টি নতুন শিল্পনগরী, ৮টি হাইস্পিড সড়ক করিডর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৫টি নতুন ভারতে তৈরি বন্দে ভারত ট্রেন চালু হয়েছে। গবেষণার জন্য ১ লক্ষ কোটি টাকার তহবিল তৈরি হয়েছে।’’
কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনতে অভিযোগ তুলেছেন, এই ১০০ দিনে মোদীর সঙ্গে আরএসএসের সম্পর্ক তিক্ত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে আঙুল তুলেছে। নরেন্দ্র মোদী দুর্বল প্রধানমন্ত্রী, তা প্রমাণ হয়েছে। ১০০ দিনেই ৩৮টি রেল দুর্ঘটনায় ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মোদী যেখানে হাজার বছরের ভিত তৈরির কথা বলছেন, সেখানে ৫৬টি নতুন পরিকাঠামো প্রকল্প উদ্বোধনের কিছু দিনের মধ্যেই ভেঙে পড়েছে।