ত্রিপুরাকে হিরের টুকরো গড়বেন জেটলি-শাহেরা

ত্রিপুরায় নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছিলেন, ‘মানিক’ ছেড়ে ‘হিরা’ হাতে নিতে। প্রতিশ্রুতির বহরে ত্রিপুরাকে ‘হিরের টুকরো’ হিসাবে গড়তেই তৎপর হল বিজেপি! তাদের ‘ভিশন ডকুমেন্টে’র প্রতি পাতায় রাজ্যের নানা অংশের মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতির ছড়়াছড়়ি।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী ও বাপি রায়চৌধুরী

কলকাতা ও আগরতলা শেষ আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২৪
Share:

দিশা: দলের ‘ভিশন ডকুমেন্ট’ প্রকাশ অনুষ্ঠানে অরুণ জেটলি ও অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। রবিবার আগরতলায়। —নিজস্ব চিত্র।

যুবদের হাতে বিনামূল্যে স্মার্টফোন! প্রতি ঘরে এক জনের চাকরি! প্রতি বিধানসভা কেন্দ্রে একটি করে কলেজ! মেয়েদের স্নাতক হওয়া পর্যন্ত নিখরচায় শিক্ষা। দরিদ্র সীমার নীচে সব পরিবারের জন্য বিনা পয়সায় স্বাস্থ্যবিমা। রাজ্যে এইম্স মানের একটি এবং বিভিন্ন প্রান্তে একাধিক মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল! সরকারি কর্মচারীদের জন্য সপ্তম বেতন কমিশন।

Advertisement

ত্রিপুরায় নরেন্দ্র মোদী ডাক দিয়েছিলেন, ‘মানিক’ ছেড়ে ‘হিরা’ হাতে নিতে। প্রতিশ্রুতির বহরে ত্রিপুরাকে ‘হিরের টুকরো’ হিসাবে গড়তেই তৎপর হল বিজেপি! তাদের ‘ভিশন ডকুমেন্টে’র প্রতি পাতায় রাজ্যের নানা অংশের মানুষের জন্য প্রতিশ্রুতির ছড়়াছড়়ি। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি আগরতলায় রবিবার ওই নথি প্রকাশ করার পরেই মোহনপুর, ছামনু ও তেলিয়ামুড়ায় তিনটি সমাবেশ করে বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ ঘোষণা করেছেন, ক্ষমতা পেলে ত্রিপুরাকে তাঁরা ‘মডেল রাজ্য’ হিসাবে গড়ে তুলবেন। শাহের হুঁশিয়ারি, ‘‘সিপিএমকে বলছি, এ বার লড়াই বিজেপি-র সঙ্গে। সামলে নিন! সন্ত্রাসে আমরা ভয় পাই না। রাজ্যের মানুষকে ভোট দিতে না দিয়ে যে ভাবে দাবিয়ে রাখা হয়েছিল, সেটা আর চলবে না!’’

বিজেপি সভাপতির হুঙ্কারের চেয়েও অনেক বেশি চাঞ্চল্য তৈরি করেছে তাঁর দলের ইস্তাহার। বিজেপি নেতৃত্ব এবং স্বয়ং জেটলির ব্যাখ্যা, নরেন্দ্র মোদীর সরকার সব নাগরিকের ‘বিকাশ’ চেয়ে যত কল্যাণমূলক প্রকল্প নিয়েছে, তার আওতাতেই এই যাবতীয় আশ্বাস পূরণ করা যাবে। যেমন, মোদীর ‘ডিজিটাল ভিশন’ অনুযায়ী স্নাতক যুবদের প্রথম দফায় স্মার্টফোন দেওয়া হবে। যার প্রেক্ষিতে আবার পাল্টা প্রশ্ন উঠেছে, কেন্দ্রীয় প্রকল্প থাকলে আর ত্রিপুরার জন্য আলাদা প্রতিশ্রুতির মোড়ক কেন?

Advertisement

আরও পড়ুন: অযোধ্যা থেকে বাবরি সরাতে বলে বহিষ্কৃত মুসলিম ল বোর্ড সদস্য

মোদীময়: ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটের আগে প্রচার বিজেপির। রবিবার আগরতলায়। ছবি: পিটিআই।

শাসক সিপিএমের নেতারা অবশ্য বিজেপি-র ঘোষণার বাস্তবায়ন নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গৌতম দাশের প্রশ্ন, ‘‘গুজরাট, রাজস্থানে তো ওঁরা ক্ষমতায় আছেন। সেখানে সব যুবক স্মার্টফোন পেয়েছেন, সব ঘরে চাকরি হয়েছে? যদি হয়ে থাকে, তার পরেও গুজরাটে বিজেপি-র ভোট কমে গেল? রাজস্থানে উপনির্বাচনে বিজেপি হেরে গেল?’’ বিজেপি-কে ‘ভারতীয় জুমলা পার্টি’ বলে কটাক্ষ করে তাঁর আরও প্রশ্ন, মুম্বই বা দিল্লি থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা ত্রিপুরায় আসবেন? উত্তর-পূর্বের সীমাবদ্ধতার কারণেই আগরতলার হাসপাতালকে সুপার স্পেশালিটি করা যাচ্ছে না বলে তাঁদের দাবি।

জেটলি এ দিন আগরতলায় বিশিষ্টদের মুখোমুখি বসে তাঁদের মন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তার আগে তাঁর দাবি, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্ট ক্যা়ডারদের দিয়ে সবাইকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে রেখেছিল। মানুষের মধ্যে ঘৃণা জমা হয়েছিল তাদের প্রতি। মানুষ তাদের উৎখাত করেছিল। এখানেও তা-ই হবে!’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিজন ধরের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকলেও হিংসা ছড়াচ্ছে বিজেপি-ই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement