বাসবরাজ সোমাপ্পা বোম্মাই। ফাইল চিত্র।
তখনও ‘নৈতিক কারণে’ পদত্যাগের চল ছিল ভারতের গণতন্ত্রে!
১৯৮৪-র লোকসভা নির্বাচনে কর্নাটকের ২৮টি আসনের মধ্যে ২৪টিতেই জনতা পার্টির হারের পরে ইস্তফা দিলেন রাজ্যের এক বছর বয়সি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী রামকৃষ্ণ হেগড়ে। খানিকটা অতর্কিতেই রাজ্যের একাদশ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন সোমাপ্পা রায়াপ্পা (এস আর) বোম্মাই। এ বারে ২২তম মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা ইস্তফা দেওয়ার পরেও বাকি সব নামের জল্পনা অসার প্রতিপন্ন করে তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে বিজেপি ঘোষণা করে বাসবরাজ সোমাপ্পা বোম্মাইয়ের নাম, যিনি এস আর-এর মেজ ছেলে। বুধবার কর্নাটকের ২৩তম মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ৬১ বঠরের বাসবরাজ, এস আর ২০০৭-এ মারা যাওয়ার পরের বছর যিনি যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে।
কর্নাটকের নবনিযুক্ত রাজ্যপাল থাওরচাঁদ গহলৌত এ দিন বোম্মাইকে শপথবাক্য পাঠ করানোর পরে তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠক ডেকে রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি এবং কোভিড মোকাবিলার হালহকিকৎ খতিয়ে দেখেন। তার আগে টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ধন্যবাদ জানান। নরেন্দ্র মোদীও টুইটে বোম্মাইকে শুভেচ্ছা জানান। তবে আলাদা একটি টুইটে ইয়েদুরাপ্পাকেও শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি মোদী। তাতে তিনি লেখেন, ‘কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ইয়েদুরাপ্পার অবদান বোঝাতে কোনও শব্দই যথেষ্ট নয়।’ অনেকেই মোদীর এই টুইটকে বলছেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ। কারণ, দলের নির্দেশ মাথা পেতে নিয়ে ইয়েদুরাপ্পা যে এ ভাবে বিনা প্রতিরোধে ক্ষমতা ছেড়ে দেবেন, এটা বোধ হয় বিজেপির শীর্ষ নেতারাও ভাবেননি। এ দিন বোম্মাইয়ের শপথপর্ব মিটতে স্বভাবতই তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।
প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত জাতিভুক্ত বোম্মাই বিজেপি নেতাদের কাছে খানিকটা স্বাভাবিক পছন্দ। ইয়েদুরাপ্পাও ছিলেন লিঙ্গায়েত। তাঁকে সরানোয় এই সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হলে তা বিজেপিকে বিপাকে ফেলতে পারত। বোম্মাইও লিঙ্গায়েত হওয়ায় সে চিন্তা রইল না। আর এইচ ডি দেবগৌড়া-এইচ ডি কুমারস্বামী জুটির পরে পিতাপুত্রের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আর এক নজির তৈরি হল কর্নাটকে।