প্রতীকী ছবি।
লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূলের সিন্দুকে আসা চাঁদার ৬৮ শতাংশই এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে। তবে টাকার অঙ্কে নির্বাচনী বন্ডে চাঁদা তোলায় সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। লোকসভা ভোটের ঠিক আগের এক বছরে প্রায় ২,৩৫৪ কোটি টাকা আয় হয়েছে বিজেপির। তার ৬১ শতাংশ— প্রায় ১,৪৫০ কোটি টাকাই এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে। মূলত সেই সুবাদেই বিজেপির আয় এক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। ওই একই বছরে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের আয় প্রায় ১৪১ কোটি টাকা। তার মধ্যে ৯৭ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে এসেছে। দেশের সাতটি রাজনৈতিক দল ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের আয়-ব্যয়ের যে অডিট রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনে জমা করেছে, তা খতিয়ে দেখে তথ্যের অধিকার কর্মী ভেঙ্কটেশ নায়েকের হিসেব, ভোটের আগের বছর ওই দলগুলির যে আয় হয়েছে, তার প্রায় ৬৫ শতাংশই নির্বাচনী বন্ড থেকে এসেছে।
দু’বছর আগে মোদী সরকারই নির্বাচনী বন্ড চালু করেছিল। স্টেট ব্যাঙ্কের থেকে এই বন্ড কিনে যে কেউ তার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে পারেন। কিন্তু এর ফলে কোন কর্পোরেট সংস্থা কোন রাজনৈতিক দলে চাঁদা দিচ্ছে, তা জানার উপায় থাকে না। বিনিময়ে তারা সুবিধা আদায় করছে কি না, তা-ও বোঝার উপার নেই। রাজনৈতিক দলগুলির চাঁদায় অস্বচ্ছতার অভিযোগ উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়েছে। যার শুনানি এখনও বাকি। বিরোধিতা সত্ত্বেও দিল্লির বিধানসভা ভোটের আগে ফের নির্বাচনী বন্ড ছাড়া হচ্ছে।
২০১৮-র মার্চের পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৬,১২৮ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড বেচেছে এসবিআই। বিজেপিই এতে সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগের বছর, ২০১৮-১৯-এ বিজেপির আয় ২,৩৫৪ কোটি টাকা। যা এক বছর আগে ২০১৭-১৮-র ১,০২৭ কোটি টাকা আয়ের দ্বিগুণ। লোকসভা আসনের মতো মোট আয় ও নির্বাচনী বন্ডের নিরিখেও বিজেপির থেকে অনেক পিছিয়ে কংগ্রেস। লোকসভা ভোটের আগের বছরে বিজেপির যেখানে মোট আয় ২,৩৫৪ কোটি টাকা, সেখানে কংগ্রেসের মোট আয় ৫৫১ কোটি টাকা। কংগ্রেসের ক্ষেত্রেও অবশ্য সিংহভাগই এসেছে নির্বাচনী বন্ড থেকে— প্রায় ৩৮৩ কোটি টাকা। মোট আয়ের শতকরা ৬৯ ভাগ।
আরও পড়ুন: মোদীর বিরুদ্ধে স্লোগান দিলে ‘জ্যান্ত পুঁতে দেব’, দিলীপের সুরেই হুমকি উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রীর
ভেঙ্কটেশের পর্যবেক্ষণ, এই সাতটি রাজনৈতিক দলের কারুরই নির্বাচনী বন্ড থেকে আয় শতকরা ৫০ ভাগের কম নয়। যার অর্থ, নির্বাচনী বন্ড রাজনৈতিক দলগুলির আয়ের প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে। বিজু জনতা দল, জেডি(এস), টিআরএসের মতো আঞ্চলিক দলও তাদের আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে ঘরে তুলছে। আবার আম আদমি পার্টি, জেডি-ইউ, এডিএমকে-র মতো আঞ্চলিক দল নিজের রাজ্যে ক্ষমতায় থাকলেও নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে কোনও চাঁদা পায়নি বলে দাবি করেছে।