ডিএমকে নেতা তথা তামিলনাড়ুর মন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিন। —ফাইল চিত্র।
সনাতন ধর্মের কুপ্রথার বিরুদ্ধে ডিএমকে নেতা তথা তামিলনাড়ুর মন্ত্রী উদয়নিধি স্ট্যালিনের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক চালিয়ে যেতে মরিয়া বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-সহ শীর্ষ বিজেপি নেতাদের পরে এ বার আসরে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। দলের বাকি নেতাদের সুরেই সনাতন ধর্ম মন্তব্য প্রসঙ্গে উদয়নিধির তীব্র সমালোচনা করেছেন নির্মলা। পাশাপাশি ‘অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে এমন বলার সাহস আছে?’ বলে মন্তব্য করে অন্য ধরনের বিতর্ক উস্কে দিতে চেয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। যা নিয়ে দিনের শেষে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
সনাতন ধর্মের জাতপাত, বর্ণভেদ-সহ নানা কুপ্রথার বিরুদ্ধে বরাবরই সরব পেরিয়ারপন্থী ডিএমকে। দিন কয়েক আগে সেই সুরেই এক অনুষ্ঠানে উদয়নিধি সনাতন ধর্মের নানা রীতিনীতিকে ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার সঙ্গে তুলনা করে সেগুলি শেষ করার কথা বলেছিলেন। বিজেপি তার পর থেকেই বিষয়টিকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উপরে আক্রমণ এবং তাদের মেরে ফেলার হুমকি বলে প্রচার করে আসরে নেমেছে। রবিবার চেন্নাইয়ে এক অনুষ্ঠানে নির্মলা প্রথমে উদয়নিধির মন্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘আপনি সংবিধানের শপথ নিয়ে মন্ত্রী হয়েছেন। সেখানে আপনি বলেছেন, অন্যের অনুভূতিতে আঘাত করবেন না। এটা যদি আপনার আদর্শও হয়, তা হলেও আপনার এমন বলার অধিকার নেই যে আপনি কোনও ধর্মকে ধ্বংস করে দেবেন।’’ ডিএমকে এবং উদয়নিধির ঘনিষ্ঠ সূত্রে নির্মলার ওই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করে বলা হয়েছে, উদয়নিধি কখনওই ধর্মকে ধ্বংস করার কথা বলেননি, বলেছেন তার কুপ্রথা ধ্বংস করার কথা। বিজেপি তথা হিন্দুত্ববাদীরা ইচ্ছাকৃত ভাবে বিষয়টিকে বিকৃত করে ফায়দা তুলতে চাইছে। উদয়নিধি যে সনাতনী কুপ্রথার দিকে আঙুল তুলেছেন, আজ নতুন সংসদ ভবনের গজদ্বারে জাতীয় পতাকা উত্তোলনে রাষ্ট্রপতির অনুপস্থিতি তাকেই প্রমাণ করেছে।
উদয়নিধির মন্তব্য নিয়ে আক্রমণের সমালোচনার মাঝেই নির্মলা জানান, সনাতন ধর্মের লোকেরা প্রত্যাঘাত করে না বলেই এমন মন্তব্য করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে এমন কথা বলার মতো মেরুদণ্ড ওদের নেই! দেখি ওরা পারে কি না!’’ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর এমন মন্তব্যে আশঙ্কার ছায়া দেখছেন বিরোধীরা। তাঁদের অভিযোগ, এ সব বলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজেই তো অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে বলা কুকথাকে উস্কানি দিচ্ছেন!
উদয়নিধির ওই মন্তব্যের পর থেকেই বিজেপি নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সমালোচনার পাশাপাশি উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা লাগাতার হুমকি দিচ্ছেন। এক সাধু উদয়নিধির মাথা কাটলে ১০ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাও করে ফেলেছেন। এই পরিস্থিতিতে উদয়নিধির বাড়ির নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। তাঁর নিরাপত্তা আধিকারিকদেরও সতর্ক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।