ফাইল চিত্র।
বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হচ্ছে সোমবার থেকে। চলবে টানা এক মাস, ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। চলতি মাসের শেষে রাজ্যসভায় ৫৫টি আসনের নির্বাচনে শরিকদের নিয়ে বিজেপি প্রায় সংখ্যাগরিষ্ঠের কাছাকাছি পৌঁছে যাচ্ছে। কিন্তু সরকারের চিন্তা অন্য।
২০২২ সালের জুলাই মাসের মধ্যে সংসদের উচ্চকক্ষে খালি হচ্ছে আশিটির বেশি আসন। যে ভাবে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্য হেরেছে বিজেপি, হাতছাড়া হয়েছে মহারাষ্ট্রও, তার পর এই সব রাজ্যে রাজ্যসভা ভোটে আসন কমবে বিজেপির। শুধু তাই নয়, ২০২২ সালের জুলাইয়ের আগে বিহার, অসম, তামিলনাড়ু, কেরল, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাবের মতো রাজ্যেও বিধানসভা নির্বাচন হয়ে যাবে। বিজেপি শিবিরের আশঙ্কা, রাজ্যে রাজ্যে হারে লাগাম কষা না গেলে রাজ্যসভাতেও তার খেসারত দিতে হবে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘সে কারণে নরেন্দ্র মোদী সরকারের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিল পাশ করানোর উৎকৃষ্ট সময় হল আগামী দু’বছরই।’’
অমিত শাহ পুরো শক্তি দিয়ে নেমেও যে ভাবে দিল্লির ভোটে ভরাডুবি হয়েছে বিজেপির, তাতে দলের মধ্যেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী এখনও সবথেকে জনপ্রিয় নেতা। জাতীয় স্তরে তাঁর কোনও বিকল্প এখনও নেই। কিন্তু রাজ্যে রাজ্যে বিজেপিকে যুৎসই কৌশল বের করতেই হবে। সব জায়গায় নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহকে সামনে রেখে এগোনো যেতে পারে না। এমনকি ২০১৭ সালে খোদ মোদী-শাহের রাজ্য গুজরাতও হাতছাড়া হতে হতে বেঁচে গিয়েছে। আর রাজ্যের উপর দখল না বাড়লে রাজ্যসভায় বিরোধীদের শক্তি
আরও বাড়বে।’’
পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১৭টি রাজ্যের ৫৫টি আসনে রাজ্যসভার ভোট ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। চলতি বছরের শেষে রাজ্যসভার আরও কিছু আসনে ভোট হবে। ২৪৫ আসনের রাজ্যসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ১২৩। চলতি বছরের ভোটে শরিকদের নিয়ে সেই সংখ্যা প্রায় ছুঁয়েই ফেলছে বিজেপি। এর অতিরিক্ত বিজেডি, টিআরএস, এয়াইএসআর-এর মতো ‘বন্ধু’ দলগুলির সমর্থনও পায় বিজেপি। কিন্তু আগামী বছর জম্মু-কাশ্মীর, কেরল, পুডুচেরীর ৮ আসন এবং ২০২২ সালে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, মহারাষ্ট্র, অসম, পঞ্জাব, ওড়িশার মতো একগুচ্ছ রাজ্যের ৭৫টি আসনে ভোট হবে। এর মধ্যে অসম বাদে সবক’টি রাজ্যেই তারা বিরোধী আসনে।
বিজেপির হিসেব, রাজ্যে-রাজ্যে বর্তমান শক্তির ভিত্তিতেই এই সব রাজ্যে বিজেপির বেশ কিছু আসন কমবে। তার উপর চলতি বছরের শেষে বিহার, সামনের বছর পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, কেরল, অসম, পুডুচেরী ও ২০২২ সালের গোড়াতেই উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, ও গোয়ায় ভোট হয়ে যাবে। ফলে এ সব রাজ্যের ফলের উপর অনেকটাই নির্ভর করবে রাজ্যসভার বিন্যাস। কংগ্রেসের এক নেতাও বলেন, ‘‘চলতি বছরে আমাদের ১৮টির মতো আসন খালি হচ্ছে, বিনিময়ে আসবে ১০-১১টি। আসল খেলা ২০২২ সালেই।’’