প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধারের যাবতীয় কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরই প্রাপ্য বলে দাবি করল বিজেপি। বিজেপির যুক্তি, কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্থা এনডিএমএ বা জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থা উত্তরকাশীর উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে, প্রধানমন্ত্রীই তার প্রধান। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয়ের যুক্তি, “প্রধানমন্ত্রীই সমস্ত কৃতিত্বের দাবিদার।”
শুধু তাই নয়। ক্রিকেট বিশ্বকাপে ফাইনালে ভারতীয় দল হেরে যাওয়ার পরে ড্রেসিং রুমে গিয়ে রোহিত শর্মাদের প্রধানমন্ত্রীর সান্ত্বনা এবং মঙ্গলবার রাতে সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের পরেই ৪১ জন শ্রমিকদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীর কথাবার্তাকে একই সুতোয় বেঁধে বিজেপির দাবি, যখনই গোটা দেশ মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে, মানুষের মনোবল ভেঙে গিয়েছে, তখনই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে এসেছেন। টোকিও অলিম্পিক্সে ভারতীয় মহিলা হকি দল মেডেল জয়ের কাছাকাছি এসে হেরে যাওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে কথা বলে একই ভাবে মনোবল বাড়িয়েছিলেন। এই ঘটনাগুলি একটি ভিডিয়ো তৈরি করেছে বিজেপি।
কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের নেতারা বলছেন, যে কোনও ঘটনাতেই নরেন্দ্র মোদী প্রচারের সুযোগ খোঁজেন। নিজের কৃতিত্ব দাবি করেন। এ বারেও তাই। প্রধানমন্ত্রী যেমন ফাইনালে রোহিত শর্মাদের হারের পরেই ক্যামেরাম্যান নিয়ে ড্রেসিং রুমে পৌঁছে গিয়েছিলেন, মঙ্গলবারও তেমনই সুড়ঙ্গ থেকে উদ্ধারের পরেই তিনি ক্যামেরার সামনে বসে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন। উচিত ছিল মানসিক ভাবে তাঁদের থিতু হতে দেওয়া। সরকারের দাবি, শ্রমিকেরা সুস্থ রয়েছেন বলে চিকিৎসকরা জানানোর পরেই মোদী তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন।
মঙ্গলবার রাতে যখন উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গ থেকে শ্রমিকরা বেরিয়ে আসছিলেন, সে সময় দিল্লিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছিল। মঙ্গলবার রাতে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরেই প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের সঙ্গে ফোনে ১৫ মিনিট ধরে কথা বলেন। তাঁদের অভিনন্দন জানান। তাঁদের বলেন, “সতেরো দিন অনেকটা সময়। আপনারা একে অন্যের মনোবল বাডিয়েছেন। আমি নিয়মিত খোঁজ নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে ছিলেন।”
কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বৈঠকের সময়ই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ছিলেন। নির্বাচনে প্রচারের ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি দিনে দু’বার করে শ্রমিকদের খোঁজ নিয়েছেন। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। সমস্ত দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের
কাজ করেছেন।”
বিস্মিত বিরোধীদের প্রশ্ন, এটাই তো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদী ও তাঁর দফতরের কাজ। তাঁর বাড়তি কৃতিত্বটা কোথায়? অনুরাগের যুক্তি, শুধু শ্রমিকদের উদ্ধার করা নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমলে ইউক্রেন, আফগানিস্তানের মতো বিভিন্ন দেশে বিপদের সময় আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে, যা অতীতে দেখা যায়নি।