এইচ ডি কুমারস্বামী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এল বিজেপি।—ছবি পিটিআই।
কর্নাটক বিধানসভার অধিবেশন শুরু হতেই মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে এল বিজেপি। শাসক জোটের বিধায়কদের ইস্তফার জেরে রাজ্যে রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে ক’দিন আগে কুমারস্বামী নিজেই আস্থা ভোটে যাবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর উপর আরও চাপ বাড়াতে বিজেপি আজ স্পিকার কে আর রমেশ কুমারের কাছে অনাস্থার পাল্টা নোটিস দিয়েছে।
২২৫ আসন বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভায় (এক জন মনোনীত সদস্য) শাসক জোটের মোট শক্তি ছিল ১১৮। কংগ্রেসের ৭৮, জেডিএসের ৩৭, বিএসপির ১ এবং দু’জন নির্দল বিধায়ক কুমারস্বামীকে সমর্থন করায় সরকার গড়েছিলেন তিনি। কিন্তু নির্দল দুই বিধায়ক ইতিমধ্যেই বিজেপি শিবিরে পৌঁছে গিয়েছেন। কংগ্রেসের ১৩ এবং জেডিএসের ৩ জন বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। সে ক্ষেত্রে ১৬ জনের ইস্তফা স্পিকার গ্রহণ করলে শাসক জোটের শক্তি দাঁড়াবে ১০০। তখন অবশ্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা ১১৩ থেকে কমে ১০৫-এ পৌঁছবে। সে রকম পরিস্থিতি এলে বিজেপির পক্ষে বিকল্প সরকার গড়ার সম্ভাবনা থাকবে। কারণ, দু’জন নির্দলের সমর্থন পেলে বিজেপির শক্তি দাঁড়াবে ১০৭। এই পরিস্থিতিতেই আজ বিধানসভার ‘বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটি’-র বৈঠকে অনাস্থার নোটিস স্পিকারের হাতে তুলে দিয়েছেন বিজেপি নেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। বিষয়টি এখন স্পিকারের বিবেচনাধীন।
এরই মধ্যে সংখ্যা জোগাড়ের চেষ্টায় কংগ্রেসের মল্লিকার্জুন খড়্গে, ডি কে শিবকুমার, গুলাম নবি আজাদরা বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বিক্ষুব্ধ বিধায়কেরা আজও মুম্বই পুলিশের কাছে আর্জি জানিয়েছেন, তাঁরা যে হোটেলে রয়েছেন, সেখানে যেন মল্লিকার্জুন খড়্গে, গুলাম নবি আজাদ কিংবা কংগ্রেসের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ঢুকতে না দেওয়া হয়। কারণ, তাঁরা কংগ্রেসের নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী নন। কংগ্রেস, জেডিএস ও নির্দল মিলিয়ে ১৫ জন বিধায়ক আপাতত মুম্বইয়ের হোটেলে ঘাঁটি গেড়েছেন। আজ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে বেঙ্গালুরুতেও যাননি তাঁরা।
আগামিকালই সুপ্রিম কোর্টে কর্নাটক মামলা উঠতে চলেছে। ১০ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়কের ইস্তফা সংক্রান্ত এই মামলায় আরও পাঁচ বিধায়ক যোগ দিয়েছেন। এই বিধায়কদের বক্তব্য, স্পিকার ইচ্ছাকৃত ভাবে তাঁদের ইস্তফা গ্রহণ করছেন না। অভিযোগের জবাব দিতে স্পিকার নিজেও শীর্ষ আদালতে পৌঁছেছেন। তাঁর বক্তব্য, ওই বিধায়কদের সদস্যপদ খারিজের জন্য দলের তরফে আসা আবেদন তাঁর বিবেচনাধীন। নিয়ম মেনে সদস্যপদ খারিজের বিষয়ে ফয়সালা করার সুযোগও রয়েছে তাঁর হাতে। তবে গত ১২ জুলাইয়ের শুনানির সময়ে সুপ্রিম কোর্ট স্পিকারকে বলেছে, ১৬ জুলাই পর্যন্ত এই বিধায়কদের ইস্তফা গ্রহণ কিংবা তাঁদের সদস্যপদ খারিজের জন্য আনা আবেদন নিয়ে ফয়সালা না নিতে। আগামিকাল শীর্ষ আদালত খতিয়ে দেখবে, বিধায়কদের ইস্তফা গ্রহণের আগে তাঁদের সদস্যপদ খারিজের আবেদন নিয়ে ফয়সালা করাটা স্পিকারের কাছে বাধ্যবাধকতা কিনা। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের যুক্তি, স্পিকার তাঁদের ইস্তফা এ কারণেই গ্রহণ করছেন না, যাতে তাঁরা দলের হুইপ মানতে বাধ্য হন এবং হুইপ অমান্য করলে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে যায়।