আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। ছবি: পিটিআই
গুজরাত থেকে দিল্লি— নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়লেন আম আদমি পার্টির প্রধান অরবিন্দ কেজরীওয়াল। এরই মধ্যে আজ তিহাড় জেলে বন্দি থাকা আম আদমি পার্টির মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের আরেকটি ভিডিয়ো ফুটেজ সামনে আসার পরে আরও চাপে পড়েছে দল।
গুজরাত বিধানসভা এবং দিল্লি পুরসভার ভোটের প্রচারে আজ আগাগোড়া বিজেপি নেতৃত্বের আক্রমণের নিশানায় ছিলেন কেজরীওয়াল। দিল্লিতে ভোটের আগে আজ ছিল শেষ রবিবার। তাই গুজরাতের পরিবর্তে আজ দিল্লিতেই প্রচারে মনোনিবেশ করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। দিল্লিতে বসবাসকারী পাহাড়ি সম্প্রদায়ের ভোট কুড়োতে মাঠে নামেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী। দিল্লির বাঙালি এলাকা বলে পরিচিত দেবনগরে প্রচারের দায়িত্বে ছিলেন বাংলার সাংসদ দিলীপ ঘোষ।
এরই মধ্যে আপ-এর বিতর্কিত মন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈনের আরও একটি ভিডিয়ো ফুটেজ আজ সংবাদমাধ্যমের সামনে আসে। যাতে তিহাড় জেলে বন্দি জৈনের কক্ষকে বিশেষ ভাবে সাফ করতে দেখা গিয়েছে একাধিক ব্যক্তিতে। জৈন প্রভাব খাটিয়ে নিয়ম বর্হিভূত এই সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন বলে প্রচারে গিয়ে সরব হয়েছেন নড্ডা। দিল্লিতে প্রচারে তিনি বলেন, ‘‘এক সময়ে যারা দুর্নীতিমুক্ত সরকার গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল, তারা দুর্নীতির কারণে জেলে গিয়েও নিজেদের দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন।’’ বিজেপির অভিযোগ, অন্তত দশ জন ব্যক্তি সত্যেন্দ্র জৈনের সঙ্গে রাখা হয়েছে। যাদের দায়িত্ব হল মন্ত্রীর ফাইফরমাশ খাটা।
সত্যেন্দ্র জৈনের ধারাবাহিক ভিডিয়ো সামনে আসায় প্রবল অস্বস্তিতে আপ নেতৃত্ব। দলের দাবি, ভোটের মুখে পরিকল্পিত ভাবে দলকে বদনাম করতে ওই ভিডিয়োগুলি এক-এক করে প্রকাশ্যে আনার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। যাতে দিল্লিবাসীর মনে আপের বিরুদ্ধে্ নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি হয়। তাই পাল্টা আক্রমণে আজ কেজরীওয়াল বলেন, ‘‘বিজেপি এখন ভিডিয়ো বানানো সংস্থায় পরিণত হয়েছে। এরা ক্ষমতায় এলে অলিতে-গলিতে এ রকম ভিডিয়োর দোকান খুলবে। দিল্লিবাসীকে বেছে নিতে হবে যে, তাঁরা ভিডিয়ো বানানো সংস্থাকে ভোট দেবেন, না কি যাঁরা দিল্লির ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দিয়ে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করত প্রস্তুত, সেই দলকে ভোট দেবে।’’ জেলের ভিডিয়ো এ ভাবে বাইরে ফাঁস হওয়া নিয়ে বিরোধীরা ইতিমধ্যেই নিশানা করেছে বিজেপিকে। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার করেই বিজেপি এই কাজ করছে, যা বেআইনি। বিজেপি অবশ্য সব দায় ঝেড়ে ফেলেছে। দলের দাবি, ভিডিয়ো ফাঁসের পিছনে তাদের নাকি কোনও হাত নেই।
দিল্লির ধাঁচেই গুজরাতের সুরাতেও আজ বিজেপির প্রচারে নিশানায় ছিলেন কেজীরওয়াল। সুরাতে বিজেপির হয়ে প্রচারে নেমে কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে উন্নয়নের প্রশ্নে দিল্লিকে পিছন দিকে ঠেলে দিয়েছেন কেজরীওয়াল। এ বার তাঁর নজর পড়েছে গুজরাতের দিকে।’’ কেজরীওয়ালকে কার্যত সন্ত্রাসবাদীর সমর্থনকারী বলে আক্রমণ শানিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদী যখন দেশকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে চাইছেন, তখন কেজরীওয়ালের মতো লোকেরা সন্ত্রাসকে মদত দিয়ে চলেছেন।’’