বিজেপি নেত্রী দ্রৌপদী মুর্মু। ফাইল চিত্র।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে এনডিএ জোটের প্রার্থী হচ্ছেন দ্রৌপদী মুর্মু। ওড়িশার প্রাক্তন বিজেপি নেত্রী দ্রৌপদী সে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল পদেও ছিলেন তিনি।
মঙ্গলবার বিজেপির বৈঠকের পরে দলের সভাপতি জেপি নড্ডা তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের নেত্রী দ্রৌপদীর নাম ঘোষণা করেন। নড্ডা বলেন, ‘‘এনডিএ শরিকদের সঙ্গে আলোচনায় সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ২০ জনের নাম এসেছিল। শেষ পর্যন্ত সর্বসম্মত ভাবে দ্রৌপদী মুর্মুর নাম চূড়ান্ত হয়েছে।
এ বারের রাষ্ট্রপতি ভোটের অঙ্ক বলছে, দেশের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হতে চলেছেন আদিবাসী নেত্রী দ্রৌপদী। কারণ, ভোটমূল্যের প্রাথমিক হিসাবে কংগ্রেস-তৃণমূল-বাম-সহ ১৮টি বিরোধী দলের প্রার্থী যশবন্ত সিনহার তুলনায় বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন তিনি।
অনেকে বলছেন, ‘রাম-রাজনীতি’র বিজেপি এটা মহাভারত-স্ট্রোক। কিন্তু উল্টো দিকে ‘দ্রৌপদী’ নামের যোগ নেহাতই কাকতালীয় বলে মনে করছেন বড় অংশ। তবে তাঁরাও বলছেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ দ্রৌপদীকে প্রার্থী করা বিজেপির ‘মাস্টারস্ট্রোক’। তাঁদের মতে, দলিত নেতা রামনাথ কোবিন্দের পরে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর দ্রৌপদীকে প্রার্থী করে এ বার বিজেপি বিরোধী জোটকে টেক্কা দিল। ওড়িশায় নেত্রী হওয়ায় নবীন পট্টনায়কের দল বিজেডির পক্ষে দ্রৌপদীকে সমর্থন করার সম্ভাবনাও প্রবল হবে।
শরদ পওয়ার, ফারুক আবদুল্লা এবং গোপালকৃষ্ণ গাঁধী বিরোধী জোটের প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করার পর যশবন্তকে প্রার্থী করেছে বিরোধী জোট। অন্য দিকে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী মনোনয়নের জন্য বিজেপির তরফে রাজনাথ সিংহ বার বার বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করলেও তা নিষ্ফল হয়েছিল। রাজনাথের প্রস্তাবে সায় দেয়নি, কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা।
এই পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারেন বলে জল্পনা দানা বেঁধেছিল। সকালে বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার বাড়িতে যান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেখানে বৈঠকের পরে দু’জনেই যান দিল্লির মৌলানা আজাদ রোডের উপরাষ্ট্রপতি ভবনে। তার পরেই দানা বাঁধে ওই জল্পনা।
ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার রায়রাংপুর কেন্দ্রের প্রাক্তন বিধায়ক দ্রৌপদী। রায়রাংপুর পুরভোটে জিতে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল পেশায় শিক্ষিকা দ্রৌপদীর। ২০০০ ও ২০০৪ সালে বিধানসভা নির্বাচনে জিতে নবীন পট্টনায়কের নেতৃত্বাধীন বিজেডি-বিজেপি জোট সরকারের মন্ত্রী হয়েছিলেন তিনি। সামলেছিলেন, পরিবহণ, পশুপালন, মৎস্য দফতর। ২০০৭ সালে ওড়িশার সেরা বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। দ্রৌপদী ২০১৫-র মে থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল ছিলেন।