CPM

রিয়াং প্রশ্নে এক মঞ্চে বিজেপি ও সিপিএম

রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরায় ছ’টি জেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া হবে, এমনই আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২০ ০৬:১৩
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ত্রিপুরায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে জট ও কাঞ্চনপুরে উত্তেজনার মধ্যেই আজ নতুন এক রাজনৈতিক সমীকরণ উঠে এল। একই আন্দোলনে শামিল হতে দেখা গেল বিজেপি-সিপিএম উভয়কেই।

Advertisement

রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরায় ছ’টি জেলায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া হবে, এমনই আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বাস্তবে উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর মহকুমাতেই ওই পাঁচ হাজার রিয়াং পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়ার কাজ শুরু করেছে বিপ্লব দেবের সরকার। দরপত্রও চাওয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছে জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি (জেএমসি)। তাদের বক্তব্য, কাঞ্চনপুরে পাঁচশোর বেশি রিয়াং পরিবারকে পুনর্বাসন দেওয়া চলবে না। বাতিল করতে হবে দরপত্র। পুনর্বাসন দিতে হবে, রিয়াংদের ভয়ে ভিটেছাড়া বাঙালি ও জনজাতি পরিবারগুলিকে।

এই সব দাবিতে জেএমসি ১৬ তারিখ থেকে অনির্দিষ্ট কালের বন্ধ চালাচ্ছে। তারই মধ্যে দুষ্কৃতী হামলায় এক জনের গুরুতর জখম হওয়া, চারটি গরু চুরির ঘটনায় আঙুল উঠছে রিয়াং শরণার্থীদের দিকে। রিয়াংদের হামলার ভয়ে গত কাল ২৮০টি বাঙালি পরিবার বাড়িঘর ছেড়ে স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় এমন উত্তেজনা থাকায় গত কালই আধাসেনা নামাতে হয়েছে কঞ্চনপুরে। রাতে জারি হয় ১৪৪ ধারাও। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই স্থানীয় জনগণ আজ জেএমসি-র নেতৃত্বে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রাস্তায় নামেন।

Advertisement

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে জেএমসি-র আন্দোলন আজ নতুন রাজনৈতিক মাত্রা পায় সিপিএম ও বিজেপির যোগদানে। সিপিএমের নেতারা এ দিন জেএমসি-র আন্দোলনে সমর্থন জানাতে তাদের আন্দোলন মঞ্চে হাজির হন। পিছিয়ে থাকেননি বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বও। তাঁরাও তড়িঘড়ি জেএমসির মঞ্চে গিয়ে তাদের আন্দোলনকে সমর্থন জানান। অস্বস্তিতে পড়েছে রাজ্যে সরকারের শরিক আইপিএএফটি। তাদের বিধায়ক প্রেমকুমার রিয়াংয়ের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের সুবিধা-অসুবিধা না দেখে, শুধু রিয়াংদের স্বার্থ দেখার অভিযোগ উঠেছে। প্রেমকুমার অবশ্য বলছেন, তাঁকে নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।

সব মিলিয়ে রিয়াংদের নিয়ে রাজ্যে রাজনীতির নতুন এক সমীকরণ দেখা গেল এ দিন। জেএমসির আহ্বায়ক সুশান্তবিকাশ বড়ুয়ার কথায়, “আমাদের আন্দোলনকে আজ বিজেপি এবং বামফ্রন্ট সমর্থন দিয়েছে। সিপিএমের জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য ললিত দেবনাথ এবং বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গৌতম রায়, সহসভাপতি রবীন্দ্র কর, অরুণ নাথের মতো শীর্ষ নেতারা এ দিন আমাদের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যও রেখেছেন তাঁরা।” সুশান্ত জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বা মুখ্যসচিবের কাছ থেকে তাঁদের দাবি মানার লিখিত আশ্বাস না-পাওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে। কাঞ্চনপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক বিক্রমজিৎ শুক্ল দাস বলেন, “১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও আজ দু’হাজারের বেশি মানুষের জমায়েত হয়েছে। সকলেই শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলনে শামিল হয়েছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement