কাশ্মীর নিয়ে ফের তরজায় বিজেপি-কংগ্রেস। —ফাইল চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতেও কাশ্মীর নিয়ে কার্যত সম্মুখ সমরে বিজেপি এবং কংগ্রেস। অতিমারি পরিস্থিতিতেই উপত্যকায় ভোট করানোর তৎপরতা শুরু হয়েছে। তার মধ্যেই কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ নিয়ে নতুন করে তরজায় জড়িয়েছে দুই শিবির। তাতে জড়িয়ে গিয়েছে পাকিস্তানের নামও। বিজেপি-র অভিযোগ, কংগ্রেস আদতে পাকিস্তানের বুলি আওড়াচ্ছে। অন্য দিকে, কংগ্রেসের দাবি, যে ভাবে উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হয়েছে, শুরু থেকেই তার বিরোধিতা করে আসছে তারা। এর সঙ্গে পাকিস্তানকে জুড়ে দেওয়া আসলে বিজেপি-র চাল।
ঘটনার সূত্রপাত একটি অনলাইন আলোচনা সভা ঘিরে। সম্প্রতি তাতে অংশ নেন কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ। সেখানে এক পাকিস্তানি সাংবাদিক সংবিধানে কাশ্মীরের জন্য অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপ নিয়ে তাঁর মতামত চান। জবাবে দিগ্বিজয় জানান, আগামী নির্বাচনে কংগ্রেস যদি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে, অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখা হবে। দিগ্বিজয় এবং ওই সাংবাদিকের এই কথোপকথনের একটি অডিয়ো রেকর্ডিংই নেটমাধ্যমে তুলে ধরেন বিজেপি-র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য।
আনন্দবাজার ডিজিটাল যদিও ওই অডিয়ো রেকর্ডিংয়ের সত্যতা যাচাই করেনি। তবে সেটিকে হাতিয়ার করেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে নেমে পড়েছে গেরুয়া শিবির। মালব্য টুইটারে লেখেন, ‘রাহুল গাঁধীর বিশ্বস্ত সহযোগী দিগ্বিজয় সিংহ পাকিস্তানি সাংবাদিককে জানিয়েছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখা হবে। তাই নাকি? আসলে এটাই তো পাকিস্তান চায়?’ বিজেপি-র সর্বভারতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্রের বক্তব্য, ‘‘ভারতের বিরুদ্ধে বিষ ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন দিগ্বিজজয়।’’ উপত্যকার প্রাক্তন উপ মুখ্যমন্ত্রী কবীন্দ্র গুপ্তর মতে, ‘‘দিগ্বিজয়ের বক্তব্য লজ্জাজনক।’’ দিগ্বিজয় কাশ্মীগের অশান্তিতে উস্কানি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীও।
যদিও দিগ্বিজয়ের দাবি, অযথা তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কিছু করে দেখানো এবং ভাবনাচিন্তা করার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। যে ভাবে অনুচ্ছেদ ৩৭০ বিলোপ করা হয়, শুরুতেই সংসদে তার বিরোধিতা করে কংগ্রেস। কারণ এ নিয়ে উপত্যকার মানুষের মতামত নেওয়াকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনা হয়নি।’’ তবে দিগ্বিজয়ের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন উপত্যকার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ফারুক আবদুল্লা। তিনি বলেন, ‘‘অনুচ্ছেদ ৩৭০ নিয়ে মুখ খোলার জন্য ওঁকে ধন্যবাদ। বিজেপি-রও বিষয়টি ভেবে দেখা উচিত। অটলবিহারি বাজপেয়ী কাশ্মীরকে মানবিকতা, গণতন্ত্রের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০১৯-এ যা হয়েছে তা গণতন্ত্রের মধ্যে পড়ে না। আমরা পাকিস্তানি নই, ভারতীয়। ভারতের একটি দল আমরা। আমাদের পাকিস্তানি বলবেন না।’’