কোল্লমের সমুদ্রে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে রাহুল গাঁধী। পিটিআই
উত্তরপ্রদেশের অমেঠী থেকে হেরে গেলেও, রাহুল গাঁধী কেরল থেকে জিতে এ বার লোকসভায় এসেছেন। বুধবার তাঁর বিরুদ্ধে উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের মধ্যে বিভাজন তৈরির অভিযোগ তুলল বিজেপি। রাহুলের মন্তব্যে জলঘোলা হওয়ার পরে সরাসরি তাঁর পাশে দাঁড়াতে চাননি কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মার মতো কংগ্রেসের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারাও।
রাহুল মঙ্গলবার তিরুবনন্তপুরমে এক সভায় বলেন, কেরলের মানুষ যে কোনও বিষয়ে উপর-উপর না দেখে তার খুঁটিনাটি নিয়ে মাথা ঘামান। গত ১৫ বছর উত্তর ভারতে সাংসদ থাকার সুবাদেই তাঁর এই উপলব্ধি বলেও জানান রাহুল। এই মন্তব্য ঘিরেই আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থেকে বিজেপি নেতারা রাহুলকে আক্রমণ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাহুল এর আগে গুজরাতিদের ব্যবসায়ী বলে বলে অপমান করেছিলেন। এখন উত্তর ভারতীয়দের অপমান করছেন।
রাহুলের পক্ষে দাঁড়িয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার সওয়াল, বিজেপি এ বিষয়ে রাজনীতি করছে। কিন্তু কংগ্রেস ‘সরকারি ভাবে’ বিজেপিকে পাল্টা আক্রমণ করলেও, কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মাদের মতো ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা বলেছেন, রাহুলই এ বিষয়ে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন। তাঁদের যুক্তি, বিজেপির মুখে বিভাজনের অভিযোগ হাস্যকর। কিন্তু কংগ্রেস উত্তর ভারতীয়দের অসম্মান করে না। উত্তর ভারত থেকেই কংগ্রেসের প্রধানমন্ত্রী, শীর্ষ নেতাদের অনেকে উঠে এসেছেন।
আজ মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের সরকারি মঞ্চ থেকেও রাহুলকে নিশানা করেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর ও রবিশঙ্কর প্রসাদ। অমেঠির সাংসদ তথা মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি রাহুলকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে তকমা দেন। বিজেপির সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত নেতা বি এল সন্তোষ বলেন, ‘‘উনি অসমে গিয়ে গুজরাতিদের ছোট করেছিলেন। পুরভোটে তার খেসারত দিতে হয়েছে কংগ্রেসকে। রাহুল গাঁধীর তবু শিক্ষা হয় না। ওঁর নিজের দলের অনেক নেতাই যে সরে যাচ্ছেন, তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।’’
কেরলে গিয়ে মৎস্যজীবীদের রাহুলের আশ্বাস, তিনি মৎস্যচাষের জন্য আলাদা মন্ত্রক করতে চান। তাঁর যুক্তি, মৎস্যজীবীরা আসলে জলের চাষি। বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, রাহুলের জানাই নেই যে, মৎস্যচাষ-ডেয়ারি-পশুপালন বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের পৃথক দফতর রয়েছে। তার মন্ত্রীও রয়েছেন। কংগ্রেসের ব্যাখ্যা, রাহুল দফতরকে মন্ত্রকের স্তরে উন্নীত করার কথা বলেছেন।