নবীন পট্টনায়ক। —ফাইল চিত্র।
রাজ্যসভায় বিজু জনতা দলের ৯ জন সাংসদের সমর্থন পেয়ে শক্তি বাড়ালো ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ। সোমবার ভুবনেশ্বরে বিজেডির সংসদীয় দলের বৈঠকে উপস্থিত ৯ জন রাজ্যসভার সদস্যকে দলের সভাপতি নবীন পট্টনায়ক সংসদে সরকার-বিরোধী ভূমিকা নিতে নির্দেশ দেন। ফলে কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের পাশে আর থাকবেন না তাঁরা।
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, যে হেতু কংগ্রেসের সঙ্গে ওড়িশায় যুযুধান বিজেডি রাজ্যসভায় বিজেপি-বিরোধী কক্ষ সমন্বয়ে স্বচ্ছন্দ নয়, তাই ওই সদনে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল তৃণমূলের সঙ্গে তারা রণকৌশল নিয়ে কথাবার্তা ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। আগামিকাল এই নিয়ে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেডি-র আনুষ্ঠানিক কথাবার্তা বা সমন্বয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন এই প্রসঙ্গে বলেছেন ‘খেলা হবে!’ অন্য দিকে বিজেপি সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জে পি নড্ডাকে আজ রাজ্যসভার নেতা হিসাবে ঘোষণা করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, গত ১০ বছর এনডিএ-র বাইরে থেকেও কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে সমর্থনের রাজনৈতিক কৌশল নিয়ে চলেছিল বিজেডি। এখনও ইন্ডিয়া মঞ্চে অংশ নিচ্ছে না দলটি, তবে বিজেপিকে ‘সর্বতো ভাবে বিরোধিতা’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেডি নেতৃত্ব। সাম্প্রতিক ভোটে ওড়িশায় ২১টি আসনের একটিও জিততে পারেনি নবীনের দল। বিধানসভার ভোটেও পরাজিত হয়ে রাজ্যের শাসন ক্ষমতা হারিয়েছে। এখন তাদের হাতে রয়েছে আগে জেতা ৯ জন রাজ্যসভার সদস্য। দলের রাজ্যসভার বিজেডি সাংসদ সস্মিত পাত্র বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, “আমরা শক্তিশালী বিরোধী হিসাবে ওড়িশার স্বার্থ নিয়ে রাজ্যসভায় লড়াই করব।”
রাজনৈতিক শিবির বলছে, রাজ্যসভায় বিজেপি-বিরোধী সংখ্যাটা দাঁড়াচ্ছে ১০৫, যা এনডিএ সরকারকে প্রতি পদে নাকানি চোবানি খাওয়ানোর জন্য যথেষ্ট। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, রাজ্যসভার মোট ২৪৫টি আসনের মধ্যে ১০৫টি আসনই যদি ইন্ডিয়া মঞ্চের পক্ষে থাকে তা হলে প্রতিটি বিল পাশ করানোর সময়েই বেগ দেওয়া সম্ভব হবে এনডিএ সরকারকে। এই মুহূর্তে রাজ্যসভার রয়েছেন কংগ্রেসের ২৬, তৃণমূলের ১৩, আপ-এর ১০, ডিএমকে-র ১০, এসপি-র ৪ (পরে বাড়বে), উদ্ধবের শিবসেনার ২, শরদ পওয়ারের এনসিপি-র ২, সিপিএমের ৫, আরজেডি-র ৫, জেএমএম-এর ৩, সিপিআই-এর ২, এমডিএমকে-র ১, কেরল কংগ্রেসের ১, আইইউএমএল-এর ১ জন সাংসদ। অর্থাৎ মোট সংখ্যা ৮৫। ইন্ডিয়া মঞ্চের বাইরে থেকে সমর্থন আসবে এ বার বিজেডি-র ৯ এবং জগন কংগ্রেসের ১১ জন সাংসদের। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এই দলগুলির অনেকেই যেহেতু কংগ্রেসের সঙ্গে সরাসরি কক্ষ সমন্বয়ে স্বচ্ছন্দ নয়, তাই তৃণমূলকেই সংযোগকারীর তথা অনেক ক্ষেত্রে এনডিএ-বিরোধিতার প্রধান কান্ডারির দায়িত্ব পালন করতে হবে রাজ্যসভায়। তৃণমূলের দাবি, অনেক ছোট দলের সাংসদ ও নেতারাই যোগাযোগ করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের সঙ্গে।