—ফাইল চিত্র।
বিজেপির বিভিন্ন পদ বা দায়িত্বে থাকা নেতারা যখন সময় মতো পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ, তখন দলের বিপ্লব-বিরোধী তথা সংস্কারপন্থী বিদ্রোহীরাই পথে নামছেন কর্মসূচি নিয়ে। মানুষ যে ভাবে তাঁদের সমর্থন জানাচ্ছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন— তাতে প্রশ্নের মুখে পড়েছে বিজেপির ‘ক্ষমতাসীন’ অংশ।
কলকাতায় বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার কনভয়ে হামলার খবর পেয়ে, পর দিনই, অর্থাৎ শুক্রবার রাতে আগরতলায় ধিক্কার মিছিলের ডাক দেন সংস্কারপন্থীরা। বড় মাপের ঘোষণা বা প্রচার ছাড়াই প্রচুর মানুষ তাতে শামিল হন। অন্য দিকে, যে কোনও বিষয় নিয়ে টুইটার-ফেসবুকে প্রায় রোজই কিছু না কিছু লিখলেও মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব নড্ডার কনভয়ে হামলা নিয়ে একটি শব্দ খরচ করেননি। রাজ্য বিজেপির তরফেও শুক্রবার রাত পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। দলের একটি অংশের তৎপরতা ও অন্য অংশের এই নিষ্ক্রিয়তায় সাংগঠিক ভাবে প্রশ্নের মুখে বিজেপি।
প্রশ্ন উঠেছে, দলের বৈঠা তবে কাদের হাতে?
গত কালের ধিক্কার মিছিলে নেতৃত্ব দেন, বিধায়ক সুদীপ রায়বর্মণ, আশিসকুমার সাহা, রামপ্রসাদ পাল, সুশান্ত চৌধুরী ও বিজেপির প্রাক্তন পদাধিকারীরা। মিছিলের শুরুতে আশিসবাবু বলেন, “বিরোধীদের উপর আক্রমণ করে বিজেপির জয় ঠেকাতে পারবে না তৃণমূল।” বিপ্লব-বিরোধী বিধায়ক সুশান্ত আজ বলেন, “আমরা মানুষের স্বার্থে কথা বলছি। বিভিন্ন অনৈতিক বিষয়ে প্রতিবাদ করছি। সভাপতির উপরে হামলার প্রতিবাদে গত কাল মিছিল করেছি। তার পরেও আমাদের ‘বিদ্রোহী’ তকমা দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যে কি কোনও প্রতিবাদও করা যাবে না!”
মুখ্যমন্ত্রী থাকা নিয়ে ময়দানে সভা করে জনতার রায় নেওয়ার কথা ঘোষণা করেও সদ্য পিছু হটতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেবকে। এর কারণ জানতে চাওয়া হলে হলে বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ বলেন, “যিনি সভা ডেকেছিলেন, তিনিই তো বাতিল করেছেন। তাঁকেই জিজ্ঞেস করুন।” ওই সভা ঘিরে জটিলতার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বাড়িতে দু’দিন ধরে মন্ত্রী-বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সুদীপরা কেন গেলেন না? সুদীপের জবাব, “খবর পেলে যেতাম। না পেলে কী করে যাব!”
সুশান্তের বক্তব্য, “দিল্লির দাবড়ানি খেয়ে মুখ্যমন্ত্রী সভা বাতিল করেছেন। তাঁর ছেলেমানুষি পুরো দলটাকে মানুষের কাছে হাসির খোরাক করে তুলেছে।” সঙ্গে সুশান্তের কটাক্ষ, “মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা ঠিক করেন নির্বাচিত বিধায়কেরা। আমাদের গণতন্ত্রে জনগণের সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনের কোন পন্থা নেই।
একমাত্র রাজাকেই এই ভাবে জনগণ নির্বাচিত করতেন বলে শুনেছি। তিনি তো ইদানীং নিজেকে স্বঘোষিত রাজা মনে করছেন।”