ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। ছবি: সংগৃহীত।
ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে জোট বেঁধেছেন বিজেপির বিধায়কেরা। তাই মুখ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে এ বার তাঁদের ‘শয়তান’ বললেন। তিনি নিজেকে প্রকারান্তরে ‘মহারাজ’ বলেও জাহির করেছেন। নিজের দলের বিধায়কদের কটাক্ষ করে এই মন্তব্যকে ঘিরে হইচই শুরু হয়েছে ত্রিপুরায়।
গত কাল মহিলা মোর্চার বৈঠকে বিপ্লববাবু বলেন, ‘‘মনে রাখবেন সব শয়তান যখন এক হয়ে যায় তখন রাজা সঠিক পথেই চলছেন। শয়তানেরা প্রশংসা করলে বুঝতে হবে রাজা সঠিক পথে যাচ্ছেন না।’’
মুখ্যমন্ত্রী নাম না করলেও ইঙ্গিত কাদের দিকে তা নিয়ে রাজনীতিকদের মনে কোনও সংশয় নেই। কারণ, রাজ্য নেতৃত্বে বদল চেয়ে দরবার করা বিধায়কের সংখ্যা বেড়েই যাচ্ছে। ইতিমধ্যেই উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণুকুমার দেববর্মণ ওই শিবিরকে সমর্থন করেছেন। মন্ত্রিসভার কয়েক জন সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রীও ওই বিধায়কদের পাশে রয়েছেন। বিধায়কদের প্রতিনিধি দল দিল্লিতে গিয়ে দলীয় সভাপতি জে পি নড্ডা ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে দেখা করে রাজ্য নেতৃত্বে বদল চেয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে ত্রিপুরায় প্রতিনিধি দল পাঠানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যেই ফের বিপ্লববাবুর মন্তব্যে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
বিধায়ক সুশান্ত চৌধুরী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘‘নিজের দলের বিধায়ক ও কর্মকর্তারা যদি শয়তান হয় তবে স্বঘোষিত রাজাকে কী বলা উচিত?’’ তাঁর হুঁশিয়ারি, গণতন্ত্রের মুখোশে রাজতন্ত্র বেশি দিন দাপিয়ে বেড়াতে পারে না। প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণের কটাক্ষ, “পাগলের হাতে কুড়াল দিলে যা হয় সর্বনাশের খেলা। রাজা তোর রাজ সভাতে পাগলের মেলা।”
বিপ্লব-বিরোধী বিধায়কদের একাংশের মতে, ইদানিং রাজ পরিবারের সঙ্গে বিপ্লববাবুর ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। রাজ পরিবারের সদস্য প্রদ্যোত কিশোর মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন। তাঁদের কটাক্ষ, প্রদ্যোতবাবুর প্রশংসার জেরেই হয়তো বিপ্লববাবু নিজেকে ‘রাজা’ মনে করছেন।