কেন্দ্রেই নানা মত চিন নিয়ে, প্রশ্ন অনেক

রবীশ কুমারের কথায়, ‘‘সেনাপ্রধান কী বলেছেন, তার ব্যাখ্যা দেওয়া বিদেশ মন্ত্রকের কাজ নয়। দেশের নিরাপত্তা সম্পর্কে আমরা সজাগ।’’

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়ত গত পরশুই ‘রাইসিনা আলোচনা’য় জানিয়েছেন, ডোকলামে অস্থায়ী পরিকাঠামো বানিয়েছে চিনা সেনা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আগের চেয়ে সংখ্যায় কম হলেও ডোকলামের একটি প্রান্তে চিনা সেনা রয়ে গিয়েছে। তারা পরিকাঠামো বানাচ্ছে।’’

Advertisement

এর চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই উল্টো সুরে বিবৃতি দিয়েছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার। তাতে বলা হয়েছে, ‘কূটনৈতিক দৌত্যের মাধ্যমে ভারত-চিন সংঘাতের পরিস্থিতির সমাধান করা হয়েছে গত বছর। তার পরেও যদি বারবার প্রশ্ন ওঠে যে, সেই অবস্থানের কোনও পরিবর্তন হয়েছে কি না, তা হলে সরকারকেও আবার বলতে হচ্ছে যে, সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রয়েছে। এর বিরুদ্ধে কোনও মতামত ত্রুটিপূর্ণ এবং উদ্দেশ্যপূর্ণ।’’

আজ সাংবাদিক বৈঠকে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্রকে বারবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। দৃশ্যতই অসহিষ্ণু রবীশ কুমার বলেন, ‘‘আমি যে বিবৃতি দিয়েছি, ওটাই আমাদের অবস্থান। আপনাদের প্রশ্ন অনুযায়ী আমি উত্তর দেব না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সেনাপ্রধান কী বলেছেন, তার ব্যাখ্যা দেওয়া বিদেশ মন্ত্রকের কাজ নয়। দেশের নিরাপত্তা সম্পর্কে আমরা সজাগ।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: পাক সীমান্তে ক্ষতবিক্ষত গ্রাম, নিন্দায় দিল্লি

এটা স্পষ্ট, ভারত-চিন-ভুটানের ত্রিপাক্ষিক সীমান্তে ডোকলামে চিনা সেনার সক্রিয়তা নিয়ে এক সুরে কথা বলতে পারছে না কেন্দ্র। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যে মতপার্থক্য বেড়েই চলেছে। সামগ্রিক ভাবে চিন নিয়ে মোদী সরকারের নীতি নিয়েও উঠছে অজস্র প্রশ্ন। যেগুলির সদুত্তর না দিতে পেরে সাংবাদিকদের সামনেই চটেমটে একশা হচ্ছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র!

সরকারের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে ঝড় উঠেছে রাজনীতিতে। সরব কংগ্রেস। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেছেন, ‘‘ডোকলামে যে চিনা সেনা ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে, উপগ্রহ-ছবিতে তা স্পষ্ট। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে ভারতের কৌশলগত এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি চ্যালেঞ্জের সামনে।’’ এরই মধ্যে রাহুল গাঁধী আজ টুইট করে ডোকলামকে ‘ধোঁকালাম’ অ্যাখ্যা দেওয়াতেও উত্তেজনার পারদ চড়েছে আরও।

কূটনীতিকদের একটি বড় অংশ মনে করছেন, ডোকলাম নিয়ে দুই মন্ত্রকের বক্তব্যের ফারাক মোদী সরকারের বিদেশনীতি নিয়ে আশঙ্কার মেঘ তৈরি করছে। প্রশ্ন উঠছে, এটা কি সমন্বয়ের অভাব? নাকি বেজিং নিয়ে হিমসিম সাউথ ব্লক কোন পথে হাঁটবে, এখনও তা স্থির করে উঠতে পারছে না? এমনটাও আলোচনায় উঠে আসছে যে, বিদায়ী বিদেশসচিব এস জয়শঙ্কর এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের ভিন্ন নীতির কারণেই কি এতটা ভঙ্গুর দেখাচ্ছে সরকারের চিনা নীতি?

প্রশ্ন অনেক, উত্তর নেই স্পষ্ট।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement