মণিপুরে মায়ানমার থেকে ঢুকে পড়া শরণার্থীরা। ছবি: রয়টার্স।
মায়ানমার থেকে বেআইনি ভাবে অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্ত করার জন্য বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পথ নিচ্ছে মণিপুর সরকার। ওই পরীক্ষার মাধ্যমেই শরণার্থীদের শনাক্ত করা হবে। শনিবার রাজ্য সরকারের তরফে বিবৃতি দিয়ে সে কথা জানানো হয়েছে।
বায়োমেট্রিক হল মানুষের শারীরিক বা আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে শনাক্তকরণ পদ্ধতি। মূলত আঙুলের ছাপ, মুখ, আইরিস, কণ্ঠস্বর, ডিএনএ, হাতের ছাপ এবং স্বাক্ষর দিয়ে বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করা হয়। সরকারি সূত্রে খবর, এই তথ্য সংগ্রহ করার পর তার ভিত্তিতে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে। সেই তালিকার মাধ্যমেই ঠিক করা হবে, শরণার্থীদের মধ্যে কারা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন এবং কাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
মণিপুর সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যে ঘুরে ঘুরে মায়ানমার থেকে আসা শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলায় জেলায় ঘুরছেন সরকারি আধিকারিকেরা। সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। কিছু দিন আগে মণিপুরে আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক পরীক্ষা করার কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকারও। শনিবার মণিপুর সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে বায়োমেট্রিক পরীক্ষার বিষয়ে স্বীকৃতি দিল।
গত তিন মাস ধরে হিংসায় জ্বলছে মণিপুর। উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যটিতে কুকি এবং মেইতেই সম্প্রদায়ের গোষ্ঠী সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত দেড়শোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ঘরছাড়া ৬০ হাজারের বেশি মণিপুরবাসী। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে সরকারি ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। মণিপুরে এই হিংসার নেপথ্যে মায়ানমার থেকে আগত অনুপ্রবেশকারীদের হাত থাকতে পারে বলেও মনে করছে সরকার। অনুপ্রবেশকারীদের হাত ধরে মায়ানমার থেকে বেআইনি অস্ত্রশস্ত্র মণিপুরে ঢোকানোর সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
অনুপ্রবেশকারীদের বায়োমেট্রিক পরীক্ষার পাশাপাশি ভারত-মায়ানমার সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজও জোরকদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত, মণিপুর-মিজোরাম সীমানার প্রায় ১০ কিলোমিটারের বেশি এলাকা বেড়া দেওয়ার কাজ শেষ হয়েছে। সীমানায় বেড়া তৈরির দায়িত্ব যে সংস্থাগুলিকে দেওয়া হয়েছে, তাদের যত দ্রুত সম্ভব কাজ শেষ করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে।