মরিচ গুঁড়ো দিয়ে বিন্দুর উপর হামলা এক কট্টরপন্থীর। ছবি: পিটিআই।
কনকদুর্গার সঙ্গে শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছিলেন। তবে সে বার কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের রক্তচক্ষু এড়াতে পারলেও এ বার তাদের হামলা থেকে বাঁচতে পারলেন না বিন্দু আম্মিনি। যদিও গোটা ঘটনাটাই সাজানো বলে দাবি করেছে কেরলের মন্ত্রী কে সুরেন্দ্র।
সোমবার কোচিতে পেপার স্প্রে (মরিচ গুঁড়ো) দিয়ে বিন্দুর উপর হামলা চালায় এক কট্টরপন্থী। পুলিশ কমিশনারের অফিসের বাইরে এই ঘটনা ঘটায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হামলার পর বিন্দুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর আপাতত এক অজ্ঞাত জায়গায় রয়েছেন বিন্দু। শ্রীনাথ পদ্মনাভন নামের ওই হামলাকারীকে মঙ্গলবার গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত কাল সোমবার শবরীমালার মন্দিরে প্রার্থনার জন্য ত্রুপ্তি দেশাই-সহ কয়েক জন সমাজকর্মীর সঙ্গে কেরলে গিয়েছিলেন বিন্দু। মঙ্গলবার সংবিধান দিবসেই শবরীমালার মন্দিরে গিয়ে প্রার্থনা করার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। তার আগে কোচিতে পুলিশ কমিশনারের কাছে নিজেদের সুরক্ষার বন্দোবস্তের জন্য আবেদন করতে যান বিন্দুরা। তবে সেই অফিস থেকে বাইরে বেরনোমাত্রই বিন্দুর চোখেমুখে পেপার স্প্রে ছিটিয়ে দেয় পদ্মনাভন।
আরও পড়ুন: ‘ত্রুটিপূর্ণ’, তবু অযোধ্যা রায়ের পুনর্বিবেচনা চান না শাবানা-নাসিররা
আরও পড়ুন: মোদী-অমিতের বৈঠক থেকেই ইস্তফার নির্দেশ গেল ফডণবীসের কাছে
গোটা ঘটনাটাই ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। যাতে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন কেরলের মন্ত্রী সুরেন্দ্রন। তাঁর দাবি, ‘‘ত্রুপ্তি দেশাই এবং অন্যদের কেরলে আসাটা কোনও ষড়যন্ত্র কি না, স্বাভাবিক ভাবেই গোটা বিষয়ে সরকারের ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রথমত, তাঁরা জানিয়েছিলেন, কোট্টায়ম হয়ে শবরীমালা যাবেন। কিন্তু তাঁদের দেখা গেল এর্নাকুলমের পুলিশ কমিশনারের অফিসে। একটি মিডিয়াই তাঁদের আসার খবর জানত। তা সত্ত্বেও এক জন পেপার স্প্রে নিয়ে ওঁদের উপর হামলা করল। যেন সে তৈরিই ছিল হামলা করার জন্য। এটা যে একটা গড়াপেটা করা চিত্রনাট্য তাতে সন্দেহ নেই। পুণের যে জায়গা থেকে তাঁরা কেরলে এসেছেন, সেখানে বিজেপি এবং আরএসএসের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ফলে অশান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিত ভাবে এটা করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: মহা-নাটকের যবনিকা পতন, রাজ্যপালের কাছে ইস্তফা দিয়ে এলেন দেবেন্দ্র ফডণবীস
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আস্থাভোট এগিয়ে দিতেই বদলে গেল মহারাষ্ট্রের পরিস্থিতি
হামলার পর বিন্দুকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি: পিটিআই।
গত বছর সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ে ১০-৫০ বছরের ঋতুমতী মহিলারাও শবরীমালার আয়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশাধিকার পান। তবে সেই রায়ের বিরোধিতায় সরব হয় রাজ্যের কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। রাজ্যে তো বটেই, গোটা দেশই তা নিয়ে উত্তাল হয়। তবে ওই আবহেও গত ২ জানুয়ারি শবরীমালার আায়াপ্পা মন্দিরে প্রবেশ করেছিলেন কনকদুর্গা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ৪০ বছরের বিন্দু আম্মিনিও। তবে গত বছর মন্দিরে প্রবেশ করলেও বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা থিতু হয়নি। সম্প্রতি বিষয়টি গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্টের সাত সদস্যের বেঞ্চে। যদিও আগের রায়ে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি শীর্ষ আদালত।