শরজিল ইমাম। —ফাইল চিত্র।
বিহারের জহানাবাদে জেএনইউ পড়ুয়া ও শাহিনবাগ আন্দোলনের গোড়ার দিকের উদ্যোক্তা শরজিল ইমামের পৈতৃক বাড়িতে আজ হানা দিল দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও বিহার পুলিশের যৌথ দল। সেইসঙ্গে জেএনইউয়ের ‘সেন্টার ফর হিস্টোরিকাল স্টাডিজ’-এর পড়ুয়া শরজিলকে ৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টোরিয়াল কমিটির কাছে হাজিরা দিতে বলেছেন মুখ্য প্রক্টর। শরজিলের বিরুদ্ধে হওয়া এফআইআর নিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে তাঁকে।
সিএএ-বিরোধী বিক্ষোভের সময়ে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করার অভিযোগে শরজিলের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে অসম, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লিতে। আজ জহানাবাদের বাড়িতে শরজিলের দেখা পায়নি পুলিশ। তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার অফিসারেরা। পুলিশ সূত্রে খবর, শরজিলের কয়েক জন আত্মীয় পটনায় থাকেন। দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দল তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
সম্প্রতি শরজিলের একটি বক্তৃতা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে শরজিল দাবি করেন, অসমকে আলাদা করে দিতে হবে ভারত থেকে। পুরো উত্তর-পূর্ব ভারত এ দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে জুড়ে রয়েছে একটি সরু অংশের মাধ্যমে। যা ‘চিকেন নেক’ হিসেবে পরিচিত। সেখানে লাখ পাঁচেক মুসলিম ঘাঁটি গেড়ে বসে পড়লেই, উত্তর-পূর্বকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া সম্ভব হবে এ দেশ থেকে। তবেই হুঁশ ফিরবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের।
আরও পড়ুন: ‘আমরা, ভারতের জনগণ...’
গত কাল ছাত্র সংগঠন আইসা এক বিবৃতিতে জানায়, তারা এবং শাহিনবাগের অন্য আন্দোলনকারীরা শরজিলের মন্তব্যকে সমর্থন করেন না। তবে শরজিলকে শাহিনবাগের প্রতিনিধি হিসেবে তুলে ধরে অপপ্রচার চালাচ্ছে বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে নানা বিজেপি শাসিত রাজ্যে রাষ্ট্রদ্রোহের মতো গুরুত্বপূর্ণ অপরাধের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ ভাবে শরজিলকে নিশানা করাও বন্ধ হওয়া উচিত।
এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মার্কন্ডেয় কাটজু জানিয়েছেন, শরজিল মোটেই অপরাধ করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমি শরজিলের বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নই। কিন্তু তৎক্ষণাৎ হিংসায় উস্কানি দেওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে উস্কানিমূলক বক্তৃতাকেও অপরাধ বলা যায় না। সুপ্রিম কোর্টের রায়েই এ কথা বলা হয়েছে। আমার মতে, শরজিলের বক্তৃতায় তৎক্ষণাৎ হিংসায় উস্কানি দেওয়ার সম্ভাবনা ছিল না।’’