— প্রতীকী ছবি।
বিহারের ভাগলপুরের সুলতানগঞ্জের গনগনিয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ি থেকে গত ৩১ জানুয়ারি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন নবগছিয়া ধ্রুবগঞ্জের বাসিন্দা নিশান্ত কুমার। চার মাস বাদে আচমকা সেই নিশান্তকেই দেখা গেল নয়ডার মোমোর দোকানে, মোমো খেতে! এ দিকে বিহারে তাঁকে মৃত ধরে নিয়ে চলছে শোকের আবহ। ঘটনাচক্রে, নিশান্তকে দেখতে পেলেন সেই শ্যালক, যাঁর বিরুদ্ধে নিশান্তকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছিল।
নিশান্ত নিখোঁজ হওয়ার পর তাঁর বাবা সচ্চিদানন্দ সিংহ সুলতানগঞ্জ থানায় শ্যালক রবিশঙ্কর সিংহ এবং শ্বশুর নবীন সিংহের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। সচ্চিদানন্দের দাবি ছিল, ছেলেকে শ্বশুর ও শ্যালক মিলে গুম করে দিয়েছেন। তরুণ পুত্রের এমন অবস্থা হওয়ায় চোখের জল বাঁধ মানেনি নিশান্তের পড়শিদের। কিন্তু চার মাস বাদেই ঘটে গেল উলট পূরাণ!
রবিশঙ্কর নয়ডায় একটি মোমোর দোকানে খেতে গিয়েছিলেন। সেখানেই তখন দাঁড়িয়ে ছিলেন এক ভিক্ষুক। বড় বড় চুল, দাড়ি। পরনে ময়লা পোশাক। তিনিও মোমো খেতে চান। কিন্তু পকেটে নেই পয়সা। মোমোর দোকানদার ভিক্ষুককে পাগল বলে গালিগালাজ করে তাড়িয়ে দিচ্ছিলেন। এমন সময় দোকানে হাজির হন রবিশঙ্কর। দৃশ্য দেখে কষ্ট পান তিনি। দোকানদারকে বলেন, এক প্লেট মোমো ভিক্ষুককে দিতে। টাকা তিনি দেবেন। ভিক্ষুক যখন মোমো খাচ্ছিলেন, তখনই চক্ষু চড়কগাছ হয় রবিশঙ্করের। এ কাকে দেখছেন তিনি! এ তো নিশান্ত!
জামাইবাবুকে ভাল করে মোমো খাইয়ে রবিশঙ্কর সোজা নিয়ে চলে যান নয়ডা পুলিশের কাছে। পরে নয়ডা পুলিশ বিহার পুলিশের হাতে হস্তান্তর করে নিশান্তকে। নিশান্তকে আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানতে চাইছে, সত্যিই কি নিশান্তকে অপহরণ করা হয়েছিল? তিনি বিহার থেকে নয়ডায় পৌঁছলেন কী করে? তা-ও জানতে চায় পুলিশ।
জামাইবাবুকে খুঁজে পাওয়ার পর স্বস্তিতে রবিশঙ্করও। তাঁর অভিযোগ, নিশান্তকে তিনিই অপহরণ করেছেন বলে পুলিশে অভিযোগ জানানো পর্যন্ত হয়েছিল। এ জন্য তাঁকে হেনস্থার মুখেও পড়তে হয়েছে বলে দাবি তাঁর। যদিও জামাইবাবুকে খুঁজে পাওয়ার পর শেষ পর্যন্ত সুবিচারও তিনি পাবেন বলে আশাবাদী রবিশঙ্কর।