মুথ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং স্পিকার বিজয়কুমার সিনহা— ফাইল চিত্র।
বিহারে ‘চক্রব্যূহ’ আরও আঁটোসাঁটো করল বিজেপি। বুধবার রাজ্য বিধানসভা স্পিকার নির্বাচনে জিতেছেন বিজেপি বিধায়ক বিজয়কুমার সিনহা। এর ফলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং তাঁর দল জেডি(ইউ)-র উপর চাপ আরও বাড়ল বলেই মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ।
প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে জেডি(ইউ)-বিজেপি জোট ক্ষমতায় আসার পর থেকেই স্পিকার পদটি নীতীশের দলের দখলে ছিল। এর আগে নীতীশের উপর চাপ বাড়িয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠ সুশীল মোদীকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে সরানো হয়েছিল। পরিবর্তে দুই নয়া বিজেপি বিধায়ককে উপমুখ্যমন্ত্রী নিয়োগ করে বিজেপি। এর পরেই জল্পনা শুরু হয়, জেডি(ইউ) প্রধান কি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের ‘চক্রব্যূহে’ অভিমন্যু হতে চলেছেন। কারণ, ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মোদীর নামে অনাস্থা জানিয়ে এনডিএ জোট ছেড়েছিলেন নীতীশ।
বুধবার স্পিকার ভোটে শাসক জোটের ফল ইতিবাচক হলেও নীতীশের ‘রাজনৈতিক ভবিষ্যতে’ তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে মনে করা হচ্ছে। যদিও বিধানসভা ভোটে সহযোগী জেডি(ইউ)-র চেয়ে বেশি আসনে জিতেও বিজেপি তাদের ‘প্রতিশ্রুতি’ রেখে নীতীশকেই মুখ্যমন্ত্রী করেছে।
২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় শাসক জোটের বিধায়ক সংখ্যা ১২৫। এর মধ্যে বিজেপি-র ৭৪, জেডি(ইউ)-র ৪৩ এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) আর বিকাশশীল ইনসান পার্টি (ভিআইপি)-র ৪ জন করে বিধায়ক রয়েছেন। বিধানসভা সূত্রের খবর, স্পিকার নির্বাচনে জয়ী বিজয় পেয়েছেন ১২৬টি ভোট। চিরাগ পাসোয়ানের দল লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র একমাত্র বিধায়ক তাঁকে সমর্থন করেছেন।
জল্পনা ছিল, প্রাক্তন মন্ত্রী নন্দকিশোর যাদব কিংবা প্রেম কুমারের মতো প্রবীণ অনগ্রসর কোনও নেতাকে স্পিকার করতে পারে বিজেপি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বেছে নেওয়া হয় উচ্চবর্ণ ভূমিহার সম্প্রদায়ের নেতা বিজয়কে। বিধানসভা ভোটে ভূমিহারদের একচেটিয়া সমর্থন পেয়েছে বিজেপি।
আরও পড়ুন: আদানি গোষ্ঠীকে বিমানবন্দর লিজ, স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেরল
স্পিকার পদে, বিরোধী ‘মহাগঠবন্ধন’-এর প্রার্থী, আরজেডি বিধায়ক অওধবিহারী চৌধুরি পেয়েছেন ১১৪টি ভোট। যদিও আরজেডি, কংগ্রেস এবং তিন বাম দল মিলে ‘মহাগঠবন্ধন’-এর বিধায়ক সংখ্যা ১১০।
আরজেডি-র পরিষদীয় নেতা তেজস্বী যাদব ধ্বনিভোটের পরিবর্তে ব্যালটে ভোটাভুটির দাবি জানালেও প্রোটেম স্পিকার জিতনরাম মাঁঝি সেই দাবি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, ‘‘বাইরের কেউ আর ভোট দিতে আসছেন না। এখানে সদ্যনির্বাচিত বিধায়কেরাই রয়েছেন।’’ আরজেডি শিবির নীতীশের দিকে ইঙ্গিত করে প্রশ্ন তোলে, বিধানসভার স্পিকার ভোটে কেন তিনি উপস্থিত রয়েছেন। প্রসঙ্গত বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই নীতীশ রাজ্য আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদের সদস্য।
আরও পড়ুন: কম আসন নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী, নীতীশ কি বিজেপি-র চক্রব্যূহে অভিমন্যু