নীতীশ কুমার। ছবি: পিটিআই।
বিহারে জন্মহার নিয়ন্ত্রণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে। দেশজোড়া বিতর্কের মুখে ক্ষমা চাইলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা জেডি(ইউ) নেতা। বুধবার বিহার বিধানসভায় দাঁড়িয়ে নীতীশ বলেন, “আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আমি আমার বলা কথাগুলি ফিরিয়ে নিচ্ছি। যদি আমার কোনও কথা ভুল হয়, তবে আমি ক্ষমা চাইছি।” একই সঙ্গে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, “কেউ যদি আঘাত পেয়ে থাকেন, আমি মন্তব্যগুলি ফিরিয়ে নিচ্ছি।”
মঙ্গলবার বিহার বিধানসভায় জাতসমীক্ষার রিপোর্ট পেশ করে বিহারের আরজেডি-জেডি(ইউ) জোট সরকার। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ জানান, বিহারের জন্মহার ৪.২ থেকে ২.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। তার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মেয়েদের শিক্ষার উপর জোর দিয়ে নীতীশ যে মন্তব্য করেন, তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। বিজেপি-সহ বিহারের বিরোধী দলগুলি নীতীশের ওই মন্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ এবং ‘অশোভনীয়’ বলে দাবি করে। মঙ্গলবারের পর বুধবারেও বিধানসভায় এই নিয়ে বিক্ষোভ দেখায় বিরোধী দলগুলি। নীতীশের ইস্তফাও দাবি করা হয়।
নীতীশ ক্ষমা চাওয়ার আগেই বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর উপর এই বিষয়ে চাপ বৃদ্ধি করতে থাকে দিল্লির মহিলা কমিশন। বুধবার নীতীশ কার্যত সাফাই গেয়েই বলেন, “আমি সর্বদা এটাই মনে করে এসেছি যে, জন্মহার নিয়ন্ত্রণে শিক্ষা জরুরি একটা বিষয়। আমার মন্তব্য কাউকে আঘাত করতে চায়নি। আমি সর্বদাই নারী ক্ষমতায়ন এবং নারীর উন্নয়নের সপক্ষে দাঁড়িয়েছি।” নীতীশের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা লালুপ্রসাদ যাদবের পুত্র তেজস্বী যাদব। তিনি দাবি করেন যে, নীতীশ স্কুলে যৌনশিক্ষার কথা বলতে চেয়েছিলেন।
তাতেও অবশ্য বিতর্ক থেমে নেই। বিজেপি নীতীশকে কটাক্ষ করে বলেছে, “নিম্ন পর্যায়ের প্রাপ্তবয়স্কের সিনেমা দেখে এই ধরনের মানসিকতা তৈরি করেছেন নীতীশ।” অনেকেই মনে করছেন, জাতগণনার দ্বিতীয় রিপোর্ট পেশ করে বিজেপিকে কোণঠাসা করার যে রাজনৈতিক কৌশল নীতীশ নিয়েছিলেন, তা অনেকটাই ধাক্কা খেল তাঁরই মন্তব্য এবং তা থেকে বিতর্কের কারণে।