রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজ হওয়া নিয়ে এই প্রথম বার প্রকাশ্যে মুখ খুললেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। — ফাইল ছবি।
আদালতের রায় নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। সম্প্রতি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের প্রচারে কর্নাটকের জনসভায় কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় তাঁকে ২ বছরের সাজা শুনিয়েছে গুজরাতের একটি নিম্ন আদালত। তার পরেই খারিজ হয়ে যায় রাহুলের সাংসদ পদ। তা নিয়ে বিরোধীরা প্রতিবাদে সরব হয়েছে। এ বার তা নিয়েই মন্তব্য এল বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকেও।
বুধবার রাজধানী পটনায় নীতীশ বলেন, ‘‘আমি ১৭ বছর ধরে সরকার চালাচ্ছি। এ দিকে-ও দিকে অনেক মামলা হয়েছে। কিন্তু আমি কখনওই আদালতের রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করিনি, করবও না। আমি শুধু চাইতে পারি, তদন্ত যেন ঠিকমতো করা হয়।’’ সম্রাট অশোকের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে নীতীশ আরও বলেন, ‘‘আমার লোকজন (জেডিইউয়ের সাংসদ এবং বিধায়করা) ওদের (বিরোধী) সঙ্গে আছেন। ওদের সুরেই কথা বলছেন।’’
বিহারের মুখ্যমন্ত্রী রাহুলের শাস্তি এবং সাংসদ পদ খারিজ হওয়া নিয়ে ভিন্ন সুরে বাজছেন বলে সম্প্রতি জল্পনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বুধবার সেই জল্পনায় জল ঢেলে বিরোধী ঐক্যের পক্ষেই সওয়াল করতে দেখা গেল নীতীশকে। রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের প্রতিবাদে পটনার বিধানসভা চত্বরে মিছিল করেন আরজেডি, জেডিইউ এবং কংগ্রেস বিধায়করা। তাতে যোগ দিয়েছিলেন সিপিআইএমএল এবং সিপিএম বিধায়করাও। বুধবার, আসন্ন লোকসভা ভোটে বিরোধী ঐক্য নিয়েও তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। নীতীশ বলেন, ‘‘অপেক্ষায় আছি। আমি দু’বার দিল্লি গিয়ে সমস্ত বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে। আমি অপেক্ষা করছি। যত বেশি বিরোধী দল একজোট হতে পারবে, আমাদের জন্য ততই ভাল।’’
গত ফেব্রুয়ারিতে সিপিআইএমএল লিবারেশনের জাতীয় সমাবেশেও কংগ্রেসকে নিয়ে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছিলেন নীতীশ। ওই সভায় উপস্থিত কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা সলমন খুরশিদকে লক্ষ্য করে নীতীশ সে দিন দাবি করেছিলেন, তাঁর পরামর্শ মানলে বিজেপি গোটা দেশে ১০০-এর কম আসন পাবে। কী ছিল তাঁর পরামর্শ? সলমনকে উদ্দেশ্য করে সে দিন নীতীশ বলেছিলেন, ‘‘আপনি এখানে আছেন। তাই আপনার মাধ্যমেই কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে আমি একটি বার্তা পাঠাতে চাই। বৈঠক ডাকুন, সিদ্ধান্ত নিন, কোথায় এবং কার সঙ্গে লোকসভা ভোটে লড়াই করতে চান। যত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবেন, ততই মঙ্গল।’’ একই কথা তার পরেও একাধিক সভায় শোনা গিয়েছে নীতীশের মুখে। এ বার রাহুলের সাংসদ পদ খারিজের প্রেক্ষিতেও সেই বিরোধী ঐক্যের কথাই আরও এক বার জোরের সঙ্গে জানিয়ে দিলেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী।