চিরাগ পাসোয়ান। ফাইল চিত্র।
বিহারে নীতীশ কুমারের সঙ্গে চিরাগ পাসোয়ানের বিবাদ মেটাতে আসন সমঝোতায় বিজেপি নিজেদের ভাগ থেকে পাসোয়ানদের লোক জনশক্তি পার্টিকে আসন ছেড়ে দিতে পারে। অন্য দিকে নীতীশ কুমার তাঁর ভাগ থেকে জিতনরাম মঁঝীর হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চাকে আসন ছাড়বে।
বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা নিজে শনিবার পটনায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশের বাসভবনে গিয়ে আসন সমঝোতা নিয়ে প্রাথমিক কথাবার্তা বলেন। প্রায় ৪৫ মিনিটের বৈঠকে বিহারের ভারপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা ভূপেন্দ্র যাদব, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী হাজির ছিলেন। নীতীশের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দলের সাংসদ রাজীবরঞ্জন সিংহ। এই বৈঠকের পরে নড্ডা ও নীতীশ আলাদা ভাবে একান্তে পাঁচ মিনিট কথাবার্তা বলেন।
নীতীশকে মুখ্যমন্ত্রী পদের মুখ করেই এনডিএ ভোটে যাবে বলে জানালেও বিজেপি মূলত মোদী সরকারের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির উপরে জোর দিয়ে ফায়দা তুলতে চাইছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’দিন আগে মৎস্যজীবী, পশুপালকদের জন্য একাধিক কেন্দ্রীয় প্রকল্প বিহার থেকে চালু করেছিলেন। রবিবার বিহারের জন্য আরও কিছু প্রকল্প উদ্বোধন করবেন। আজ নড্ডাও বিজেপির মঞ্চ থেকে ‘আত্মনির্ভর বিহার’ প্রচারে যোগ দেন। সুশান্ত সিংহ রাজপুতের আবেগকে হাতিয়ার করতে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীসও পটনায় ঘাঁটি গেড়েছেন।
রাজনৈতিক সূত্রের খবর, নীতীশ এ দিনের বৈঠকে লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি চিরাগ পাসোয়ান সম্পর্কে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এনডিএ শরিক হলেও রামবিলাস পাসোয়ানের ছেলে চিরাগ নীতীশ সরকারের কাজকর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিহার বিধানসভায় ২৪৩ আসনের মধ্যে তাঁরা ১৪৩ আসনে লড়তে তৈরি বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। বিহারের দলিত সমাজের একমাত্র মুখ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে মরিয়া চিরাগের ক্ষোভের কারণ, নীতীশ এনডিএ-তে আর এক দলিত নেতা জিতনরামকে নিয়ে এসেছেন। চিরাগ এ দিন জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে নীতীশের কোনও সমস্যা নেই। বিজেপি নেতৃত্বের উপরে তাঁর পূর্ণ আস্থা রয়েছে। বিজেপি রাম-শ্যাম-যদু যাঁকেই বাছুক, তাঁর তাতে কোনও সমস্যা নেই। তাঁর দাবি হল, শরিক দলগুলিকে নিয়ে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি তৈরি করতে হবে। সেখানে তাঁর ‘বিহার ফার্স্ট, বিহারি ফার্স্ট’ প্রচারের কথা যোগ করতে হবে।
২০১৯-এ লোকসভা ভোটে বিজেপি ও জেডিইউ সমান-সংখ্যক আসন ভাগ করে নেয়। বিধানসভাতেও সেই সমীকরণ মেনেই আসন সমঝোতা হবে বলে খবর। জেডিইউ নেতাদের বক্তব্য, সে ক্ষেত্রে তাঁদের ভাগ থেকে জিতনরামকে আসন দেওয়া হবে। লোক জনশক্তি পার্টির সঙ্গে জেডিইউয়ের সমঝোতা হয়নি। তাদের কত আসন দেওয়া হবে, তা বিজেপি বুঝে নেবে।