জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় সাম্প্রতিক কালের সবচেয়ে বড় হামলা চালাল পাকিস্তান। মঙ্গলবার ভোরবেলা থেকে সাম্বা জেলার রামগড় সেক্টর ও তার আপাশের এলাকায় মর্টার-সহ গুলিবর্ষণ করে পাক রেঞ্জার্স। সেনা সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর পর্যন্ত পাকিস্তান রেঞ্জার্স-এর মর্টার হানায় চার মহিলা ও দুই শিশু-সহ নিহত হয়েছেন আট জন। আহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২। গুলি ও মর্টার ছুড়ে পাক হামলা প্রতিরোধ করছেন বিএসএফ জওয়ানরাও। সেনার মুখপাত্র মণীশ মেহতা বলেন, “পাক হামলার যোগ্য জবাব দেওয়া হচ্ছে।”
এ দিন ভোর সাড়ে ৫টা থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালায় পাকিস্তান। জম্মু ও কাশ্মীরের নৌশেরা ও রাজৌরি জেলায় বার বার গোলাবর্ষণ করে তারা। সেনার দাবি, কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই এ দিন ১২০ মিলিমিটার মর্টার দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে। পাশাপাশি, সাম্বা জেলার রামগড় সেক্টরে ভারতীয় সেনা চৌকি ছাড়াও আশপাশের গ্রামগুলো লক্ষ্য করে মর্টার ছুড়তে থাকে তারা।
এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ভোর থেকেই নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর এলাকায় যথেচ্ছ গোলাবর্ষণ শুরু করে পাক রেঞ্জার্স। সাম্বা জেলায় বছর একুশের এক মহিলা নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন এসএসপি যোগিন্দর সিংহ। অন্য দিকে, পানিয়ারি সেক্টরে নিহত দু’জন মহিলা। আর্নিয়ায় আহত হয়েছেন তিন গ্রামবাসী। পিন্ডি চক্র গ্রামে আহত হয়েছেন তিন জন গ্রামবাসী। তাঁদের গুরুতর জখম অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মর্টারের স্প্লিন্টারের আঘাতে জের্দা গ্রামে এক কিশোরী নিহত হয়েছে। পাক হামলার জবাবে বিএসএফ জওয়ানরাও গোলাবর্ষণ শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন এক সেনা আধিকারিক। এই সব এলাকা থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকায় ১৭৪টি স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
গত রবিবারও একই ভাবে সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে হামলা চালায় পাকিস্তান। বালাকোট জেলায় কোনও রকম প্ররোচনা ছাড়াই পাক হামলায় নিহত হন এক সেনা জওয়ান।
বিএসএফ-এর ডিআইজি (জি) ধর্মেন্দ্র পারিখ বলেন, “পাকিস্তান রেঞ্জার্সের জওয়ানরা প্রথমে গুলি ছুড়তে থাকলেও সাড়ে ৬টা নাগাদ মর্টার হামলা শুরু করে। সাম্বা ও জম্মু জেলার যথাক্রমে রামগড় ও আর্নিয়া সেক্টরের চার-পাঁচ জায়গা থেকে ছড়িয়ে পড়ে হামলা চালায় তারা।” পারিখের দাবি, এই সব এলাকা দিয়ে পাক মদতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাও করা হয়েছে।
আরও পড়ুন