কাশ্মীরে লক্ষ্যপূরণে তৃপ্ত মোদী-শাহ, অর্থে অনর্থ ঢেকে ৩৭০-এ জয়ধ্বনি

দ্বিতীয় দফায় প্রথম ১০০ দিনের প্রধান সাফল্য হিসেবে আজ ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’-কেই তুলে ধরছে বিজেপি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৩৪
Share:

—ফাইল চিত্র।

ক্ষমতায় ফিরলে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করা হবে— লোকসভা ভোটের আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছিল বিজেপি। সরকারের প্রথম ১০০ দিন পেরিয়ে আজ সে কথা খোলসা করলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের মন্ত্রীরাই।

Advertisement

দ্বিতীয় দফায় প্রথম ১০০ দিনের প্রধান সাফল্য হিসেবে আজ ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করার ‘সাহসী সিদ্ধান্ত’-কেই তুলে ধরছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর বলেন, ‘‘৩৭০, তিন তালাক, বা ইউএপিএ-র মতো ক্ষেত্রে সাহসী সিদ্ধান্ত নেওয়া গেছে কারণ ভোটের আগে থেকেই ঠিক ছিল, ক্ষমতায় ফিরলে এগুলো করা হবে।’’ আর্থিক অবস্থা নিয়ে আগের অবস্থান বজায় রেখে জাভড়েকরের দাবি, ‘‘আতঙ্কের অবস্থা তৈরি হয়নি। অর্থনীতির ঝিমুনি এসেছে ব্যবসার ওঠানামার নিয়মে।’’

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চরম আর্থিক সঙ্কটের মুখোমুখি দেশ। চন্দ্রযান-কাশ্মীর-রামমন্দির থেকে সরে এ বার সরকার অর্থনীতির দিকে নজর দিক। কিন্তু মোদী সরকারের মন্ত্রীরা অর্থনীতির বেহাল দশার কথা মানতেই নারাজ! জাভড়েকরের যুক্তি, ‘‘অর্থনীতির ঝিমুনি সাময়িক। মন্দার রাস্তায় অর্থনীতি চলে যায়নি।’’ আর্থিক বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নামা নিয়ে তাঁর দাবি, ‘‘ইউপিএ সরকারের আমলে যখন বৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের উপরে ছিল, তখনও এক-আধ বার বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমেছিল।’’

Advertisement

আজও বিরোধী শিবির অর্থনীতির দুরবস্থা নিয়ে বারবার প্রশ্ন তুলেছে। কিন্তু জাভড়েকর যে ভাবে সব আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছেন, তাতে অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন, সরকার যদি অর্থনীতির রোগের কথা স্বীকারই না করে, তা হলে দাওয়াই দেবে কী ভাবে?

হরিয়ানা, মহারাষ্ট্রের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ করাকেই পুঁজি করবে বিজেপি। দল মনে করছে, এ নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের অবস্থানকে মানুষ গ্রহণ করেছেন এবং তাঁর প্রতি সমর্থনও বেড়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী আজ হরিয়ানায় বলেন, প্রথম ১০০ দিনের কাজের মধ্যে রয়েছে উন্নয়ন, বিশ্বাসযোগ্যতা, মানুষের সমর্থন, সাহসী সিদ্ধান্ত, বড় মাপের সংস্কার।

সরকারের ‘নম্বর টু’, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথায়, ‘‘ জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ও ৩৫এ অনুচ্ছেদ রদ করা, তিন তালাকের অভিশাপ থেকে মুসলিম মহিলাদের মুক্ত করা এবং ইউএপিএ আইন সংশোধন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে মজবুত করা— এই সব সাহসী সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রী মোদীর নির্ণায়ক নেতৃত্বের ফল।’’

কংগ্রেসের কপিল সিব্বল আজ অভিযোগ করেন, বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে নেমে এসেছে। যা গত ছয় বছরে সর্বনিম্ন। কেনাকাটায় বৃদ্ধির হার ৫৪ মাসে সর্বনিম্ন। নতুন মূলধন কমছে। নির্মাণ, কারখানায় উৎপাদন, আটটি পরিকাঠামো ক্ষেত্র থেকে কৃষি— সবেই বৃদ্ধির হার তলানিতে। অগস্টে বিশ্বের মুদ্রাগুলির মধ্যে টাকার হাল সব থেকে খারাপ। বিদেশি লগ্নিকারীরা শুধু অগস্টেই শেয়ার বাজার থেকে ৫,৯২০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন।

কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধীর কটাক্ষ, ‘‘১০০ দিনে কোনও উন্নয়ন না হওয়ার জন্য মোদী সরকারকে অভিনন্দন!’’ জাভড়েকরের পাল্টা জবাব, ‘‘যিনি গত ১০০ দিনের মধ্যে ৯০ দিন কোথায় ছিলেন, কেউ জানে না, তার কথার কী প্রতিক্রিয়া জানাব!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement