শ্রীনগরে কড়া পাহারায় সেনা জওয়ান। ছবি: পিটিআই।
কাশ্মীর নিয়ে ভারতের পাশে দাঁড়ালেও, উপত্যকা অঞ্চলের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল আমেরিকা। বৃহস্পতিবারই মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র এ প্রসঙ্গে জানান, কাশ্মীরবাসীদের উপর নানা রকম নিষেধাজ্ঞা এবং আটক সংক্রান্ত যে সব রিপোর্ট ওই অঞ্চল থেকে পাওয়া যাচ্ছে তা খুবই চিন্তার বিষয়।
তবে কাশ্মীরের পরিস্থিতি খুব দ্রুতই স্বাভাবিক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ওই মুখপাত্র। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “জম্মু-কাশ্মীরে দ্রুত স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এই বিবৃতিকে আমরা স্বাগত জানাই। শুধু তাই নয়, কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে পরিবেশ তা দ্রুত বদলাবে এবং এ ব্যাপারে দু’দেশের সরাসরি আলাপ-আলোচনাকেই স্বাগত জানাব আমরা।” পাশাপাশি সীমান্ত সন্ত্রাস বন্ধ করতে পাকিস্তানকেও পরোক্ষে হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। এ ব্যাপারে মার্কিন বিদেশ দফতরের ওই মুখপাত্র পাকিস্তানকে পরামর্শ দেন, নিয়ন্ত্রণরেখায় তারা যেন শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখে।
যদিও ভারতের বিদেশমন্ত্রক থেকে এক বিবৃতি দিয়ে কাশ্মীরের পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। উপত্যকার পরিস্থিতির যে উন্নতি হয়েছে সে কথাও জানানো হয়েছে ওই বিবিৃতিতে। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবীশ কুমার জানান, জম্মু, লাদাখে ফোনের ল্যান্ডলাইন পরিষেবা চালু হয়েছে। কাশ্মীরে এক প্রস্থ এই পরিষেবা চালু হয়েছে। ৮৫ শতাংশ থানা কাজ করছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল সত্যপাল মালিক ৫০ হাজার নতুন চাকরির ঘোষণাও করেছেন।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাসই পাকিস্তানের নীতি, তোপ বিদেশ মন্ত্রকের
আরও পড়ুন: ‘ত’-এ তরোয়ালই চান প্রধানমন্ত্রী
দিন কয়েক আগেই ফ্রান্সের বিয়ারিত্জে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলন হয়। সেখানে কাশ্মীর নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই বৈঠকেও ট্রাম্পকে মোদী স্পষ্ট বার্তা দেন যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে সমস্যাগুলো রয়েছে সেটা ১৯৪৭-এর আগে থেকেই। সেই সমস্যাগুলো দ্বিপাক্ষিক বিষয়। এতে তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা কোনও ভাবেই মেনে নেবে না ভারত।
ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহারের পর থেকেই কাশ্মীর নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে বারংবার দরবার করেছে পাকিস্তান। ভারতকে এই প্রসঙ্গেই কোণঠাসা করার চেষ্টা করে নিজেদেরই মুখ পুড়িয়েছে তারা। এক মাত্র চিন ছাড়া কেউই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি। শুধু তাই নয়, এটা ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলেও জানিয়ে দেয় রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যরা। ডোনাল্ড ট্রাম্প কাশ্মীর নিয়ে বার তিনেক মধ্যস্থতার প্রস্তাবও দিয়েছিলেন। কিন্তু তা গোড়াতেই থামিয়ে দিয়ে ভারত আমেরিকাকে বার্তা দেয় এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কোনও তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা তারা বরদাস্ত করবে না।
কাশ্মীর নিয়ে বার বার আন্তর্জাতিক মহলে ঠোক্কর খেয়েও ক্ষান্ত হয়নি পাকিস্তান। মঙ্গলবার ফের তারা রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ে চিঠি দেয়। সেই চিঠিতে তারা জানায়, জম্মু-কাশ্মীরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনকে লঙ্ঘন করছে ভারত। কিন্তু তাতে খুব একটা আশাপ্রদ সাড়া মেলেনি বলেই সূত্রের খবর। পাকিস্তানকে কড়া জবাবও দিয়েছে ভারত। দেশের বিদেশমন্ত্রক সূত্রে পাকিস্তানকে আক্রমণ করে বলা হয়, জঙ্গি নয়, ব্যবসার উপর জোর দিক পাকিস্তান। একটা প্রতিবেশীর মতোই আচরণ করা উচিত তাদের।