আপেল বাগান কি ছাড়তে হবে, চিন্তা

সোমবার রাজ্য হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার ৩৭০ ধারা তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। এর আগে কয়েকদিন ধরেই উপত্যকায় চলছিল তার প্রস্তুতি। যা চোখ এড়ায়নি বাব-ছেলের।

Advertisement

জয়ন্ত সেন 

গোলাপগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৯ ০৪:০৮
Share:

স্বামী ও ছেলে ফেরার অপেক্ষায় হাকিমন (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

দিনের অনেকটা সময় সোলেমান ও সুভানের কেটে যায় আপেল বাগানে। গাছের পরিচর্যা থেকে শুরু করে আপেল পাড়া, সেগুলো যত্ন করে বাক্সবন্দি করা। জম্মু-কাশ্মীরের বারামুলা জেলার বনিয়ার এলাকায় ওই বাগানে তিনমাস হল কাজে ঢুকেছেন বছর আটচল্লিশের সোলেমান। নিয়ে গিয়েছেন বাইশ বছরের ছেলে সুভানকেও। মালদহের কালিয়াচকের চকমাইলপুরের বাসিন্দা বাবা-ছেলের ভালই লাগছিল এই কাজ। বাদ সাধল উপত্যকা ঘিরে সাম্প্রতিকতম পরিস্থিতি।

Advertisement

সোমবার রাজ্য হিসেবে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার ৩৭০ ধারা তুলে নিয়েছে কেন্দ্র। এর আগে কয়েকদিন ধরেই উপত্যকায় চলছিল তার প্রস্তুতি। যা চোখ এড়ায়নি বাব-ছেলের। চকমাইলপুর গ্রামে বাড়িতে বসে সোলেমানের স্ত্রী হাকিমন বিবি জানালেন সেই কথা। দিনতিনেক আগেই তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে সোলেমানের। সোলেমান তখনই জানিয়েছিলেন যে, এলাকার পরিস্থিতি সুবিধের ঠেকছে না তাঁর কাছে। সারাদিন ধরে শুধু সেনাবাহিনীর ভারী বুটের শব্দ। আর রাতে গোলাগুলির আওয়াজ। বাজার খোলে দিনে একবার। সুযোগ পেলেই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরবেন তিনি। তারপর থেকেই ফোন বন্ধ। কোনও ভাবেই আর যোগাযোগ করতে পারছেন না স্বামীর সঙ্গে। উৎকণ্ঠা বাড়ছে হাকিমনের। বললেন, ‘‘গ্রামেরই তো আরও কয়েকজন বারামুলার উড়িরডাচি এলাকায় একই কাজ করেন। তাঁদের বাড়ির লোকজন জানিয়েছেন যে কাশ্মীর থেকে জম্মু এসে কোনওরকমে ট্রেনে করে তাঁরা বাড়ি ফিরে আসছেন। কিন্তু সুভান ও ওর বাবা কোথায় আছে, কবে ফিরবে, বুঝতে পারছি না। তিনদিন ধরে স্বামীর মোবাইল সুইচ্ড অফ বলছে। খুব দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’

ওই গ্রামেরই বাসিন্দা মন্টু মিয়াঁর দুই ছেলে হাসান শেখ ও রেজাউল মিয়াঁ কাশ্মীরের বারামুলা জেলার উড়িয়ারডাচি গ্রামে আপেল বাগানে কাজ করেন। এদিন মন্টু বলেন, ‘‘এলাকার পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠায় দুই ছেলে জম্মু থেকে ট্রেনে চেপেছে। ফোনে বেশি কথা হয়নি। ছেলেরা এলেই পরিস্থিতি জানতে পারব।’’ মালদহের অতিরিক্ত জেলাশাসক অশোককুমার মোদক বলেন, ‘‘কাজে গিয়ে কাশ্মীর থেকে ফিরে আসছেন এমন কোনও খবর আমাদের কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement