ছবি: এএফপি।
বিশেষ মর্যাদা লোপের ঠিক পরে জম্মু-কাশ্মীরের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার যে খুবই কম ছিল তা সংসদে মেনে নিল কেন্দ্র। সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি জানিয়েছেন, এখন জম্মু-কাশ্মীরে পরীক্ষা চলছে। এখন পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ৯৯.৭ শতাংশ।
এ দিন রাজ্যসভায় কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা চেয়ে নোটিস দিয়েছিল সিপিএম-সিপিআই। এ নিয়ে সরবও হন দুই দলের সাংসদেরা। কিন্তু পরে রাজ্যসভার অধিবেশন স্থগিত হয়ে যায়। তবে রেড্ডি লোকসভায় দাবি করেছেন, প্রথমে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার কম থাকলেও পরে ধীরে ধীরে তা বেড়েছিল। কিন্তু কোনও স্কুলে তার প্রমাণ মেলেনি বলে দাবি স্থানীয় সূত্রের।
কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা লোপের কিছু দিন পরে স্কুল খুললেও অধিকাংশ অভিভাবকই সন্তানকে পাঠাতে রাজি ছিলেন না। ফলে স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতির হার ছিল খুবই কম। ইউরোপীয় পার্লামেন্টের বাছাই করা সদস্যদের কাশ্মীর সফরের সময়ে সেখানে দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষা নেওয়ার ব্যবস্থা করে প্রশাসন। উপত্যকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে দেখাতেই এমন পদক্ষেপ করা হয়েছিল বলে দাবি করেন বিরোধীরা। বিপদের আশঙ্কা সত্ত্বেও পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে বাধ্য হয় পড়ুয়ারা। তবে গণপরিবহণ সে ভাবে চালু না হওয়ায় বিপাকে পড়ে অনেকেই। বিরোধীদের মতে, কোনও পরীক্ষার্থীই এক বছর পিছিয়ে পড়তে চাইবে না। তাঁদের প্রশ্ন, পরীক্ষার সময়ের উপস্থিতির হার দিয়ে কি বোঝানো যাবে যে কাশ্মীরে স্কুল স্বাভাবিক ভাবে চলছে?
আরও পড়ুন: তুমুল বিতর্কের জের, মার্শালদের নয়া পোশাক পুনর্বিবেচনা করা হবে, রাজ্যসভায় ঘোষণা বেঙ্কাইয়ার
আইন-শৃঙ্খলা প্রশ্নেও আজ কেন্দ্রের জবাবে নানা অসঙ্গতি দেখছেন বিরোধীরা। বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকে কত বার বিক্ষোভ সামলাতে ছররা ব্যবহার করা হয়েছে তা সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল। ঘটনার সংখ্যা জানায়নি সরকার। কেবল জানানো হয়েছে, ছররা ব্যবহারের সময়ে সতর্ক ছিল বাহিনী। সাধারণ বাসিন্দারা যাতে হতাহত না হন তা নিশ্চিত করতে কেবল গুরুতর পরিস্থিতিতে ছররা ব্যবহার করা হয়েছে।
আজ কেন্দ্র জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরে বিশেষ মর্যাদা লোপের পর থেকে পাথর ছোড়ায় যুক্ত থাকার অভিযোগে ৭৬৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিশেষ মর্যাদা লোপের পরে পাথর ছোড়ার ঘটনা কমেছে বলেও দাবি তাদের।
বিরোধীদের মতে, এ ক্ষেত্রেও অসঙ্গতি রয়েছে। কারণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়ে পাথর ছোড়ার ১৯০টি মামলা দায়ের হয়েছে। সেই মামলাগুলির সূত্রে ৭৬৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৪ অগস্ট পর্যন্ত সময়কালে পাথর ছোড়ার ৩৬১টি মামলা দায়ের হয়েছিল। বিরোধীদের প্রশ্ন, ৫ অগস্টের আগে কত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা কেন জানাল না কেন্দ্র? তা না জানিয়েই কী ভাবে দাবি করা হচ্ছে যে পাথর ছোড়া কমেছে? তাঁদের আরও দাবি, এর আগে সরকারি সূত্রেই প্রায় ৬ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার কথা জানানো হয়েছিল। তার মধ্যে ৬০৮ জন পাথর ছোড়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে দাবি করা হয়েছিল।