জেলেও তো গুলি চলে না: তারিগামি

নরেন্দ্র মোদী তাঁর জন্মদিনে বললেন, কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর বল্লভভাই পটেলের ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। উল্টো দিক থেকে আজই প্রথম শোনা গেল কাশ্মীর উপত্যকার নিজস্ব রাজনৈতিক স্বর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৫৮
Share:

সীতারাম ইয়েচুরিকে (বাঁ দিকে) সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি। মঙ্গলবার দিল্লিতে। ছবি: এপি।

একটাও গুলি চালাতে হয়নি, অতএব কাশ্মীরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক— সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করার পর থেকে এটাই দাবি করে আসছে কেন্দ্রীয় সরকার। নরেন্দ্র মোদী তাঁর জন্মদিনে বললেন, কাশ্মীরের ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদের পর বল্লভভাই পটেলের ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। উল্টো দিক থেকে আজই প্রথম শোনা গেল কাশ্মীর উপত্যকার নিজস্ব রাজনৈতিক স্বর।

Advertisement

দিল্লিতে বসে সিপিএম নেতা মহম্মদ ইউসুফ তারিগামি মঙ্গলবার বললেন, ‘‘জেলেও তো গুলি চলে না। কিন্তু জেল তো জেলই!’’ তাঁর আহ্বান, ‘‘একজন হিন্দুস্তানি হয়ে বলছি, এক পক্ষে কথা না শুনে কাশ্মীরের মানুষের কথাও শোনা হোক।’’

৫ অগস্টের পর থেকে জেল নয়, শ্রীনগরে নিজের বাড়িতে ‘বন্দি’ ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে দিল্লির এমস-এ চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন। তার পর এই প্রথম মুখ খুলে তারিগামির মন্তব্য, ‘‘রাজধানীতে বসে স্বাধীনতার মুহূর্তগুলো উপভোগ করছি।’’ বস্তুত, এ দিন তারিগামির কথায়, কাশ্মীরের অনেক খারাপ সময় তিনি দেখেছেন। কিন্তু কখনও এতটা হতাশ হয়ে পড়েননি। কেন? ২৪ বছর ধরে কুলগামের বিধায়ক পদে থাকা তারিগামির জবাব, ‘‘ভারতের সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের ঐক্যের ভিতেই ঘা পড়ে গিয়েছে। আমি তো বিদেশি নই। ফারুক আবদুল্লা, অন্য নেতারা তো সন্ত্রাসবাদী নন। আমাদের তো সন্ত্রাসবাদীদের মতো করে দেখানো হচ্ছে।’’

Advertisement

তারিগামি গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় তাঁর সঙ্গে যো‌গাযোগ করতে না পেরে সুপ্রিম কোর্টে হেবিয়াস কর্পাস-এর মামলা করেছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি। সুপ্রিম কোর্ট ইয়েচুরিকে শ্রীনগরে যাওয়ার অনুমতি দেয়। তারপর চিকিৎসার জন্য এমস-এ আসার অনুমতি পান তারিগামি। এখন তিনি সুস্থ। সোমবারই সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, তারিগামি চাইলে শ্রীনগরে ফিরে যেতে পারেন। তারিগামি ফিরে যাওয়ার আগে ৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ এবং জম্মু-কাশ্মীরকে ভেঙে দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করবেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর দাবি, ‘‘এই ব্যবস্থায় কাশ্মীরিরা চরম অপমানিত হয়েছেন। যারা বিচ্ছিন্নতাবাদ-সন্ত্রাসবাদে ধুয়ো দেয়, তাদেরই সুবিধা হয়েছে।’’

সরকার কিন্তু দাবি করছে, পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক! তারিগামির পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘একে স্বাভাবিক অবস্থা বলে? ৪০ দিনের বেশি মোবাইল-ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখাটা স্বাভাবিক? দিল্লি বা অন্য কোনও শহরে সাত দিনের জন্য করে দেখুন না, কী অবস্থা হয়! রুটিরুজি কোথা থেকে আসে! ব্যবসা কী ভাবে চলে! হাসপাতালে কী ভাবে চিকিৎসা মেলে! স্কুলের শিশুদের কী অবস্থা হয়!’’ সরকার আশ্বাস দিয়ে বলছে, কেউ মারা যায়নি। তারিগামির দাবি, ‘‘কাশ্মীরিরা ধীরে ধীরে মরছে। দমবন্ধ হয়ে আসছে।’’ তারিগামির নিজের বাড়িতেও ল্যান্ডলাইন এখনও কাজ করছে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement